গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ ও সদর আংশিক) আসন জাতীয় সংসদের ১৯৮ নম্বর আসন। কালীগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন, গাজীপুর সিটির তিনটি ওয়ার্ড (৪০-৪২ নং) গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে জেলায় পরিচিত রয়েছে। গাজীপুরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই শক্তিশালী। তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে আওয়ামী লীগের এ ঘাঁটি ধরে রাখতে বেশ বেগ পেতে হবে।
স্বাধীনতার পর থেকে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ জিতেছে সর্বোচ্চ ছয় বার, বিএনপি তিন বার এবং জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র একবার।
এ আসনে মেহের আফরোজ চুমকি আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য। বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এ নির্বাচনী এলাকার ব্যাপক উন্নয়নও করছেন। এবারও তিনি দলের কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশী। সেই লক্ষ্যে তিনি দলীয় মনোনয় ফরম সংগ্রহ করেছেন এবং জমা দিয়েছেন।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ সংগঠন। এখানে (গাজীপুর-৫) অনেকেই প্রার্থী হতে পারে, অনেকেরই যোগ্যতা থাকতে পারে। তবে যোগ্যতার বিচার যদি করা হয়, জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে আমি আছি, জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমি এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন করেছে ঠিক তারই ধারা অব্যাহত রেখে আমি আমার গাজীপুর-৫ আসনে উন্নয়ন করে চলেছি। এখন কালীগঞ্জকে মানুষ আধুনিক কালীগঞ্জ বলে। আমি নারী ক্ষমতায়ন, নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করেছি। আমার বিশ্বাস, সব বিবেচনা করে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না। তিনি পুনরায় আমাকে নৌকা মার্কা দেবেন।
এছাড়াও, আওয়ামী লীগের আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক এমপি, ডাকসু’র সাবেক জিএস ও ভিপি, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারউজ্জামান। তিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর জেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট আশরাফী মেহেদী হাসান, উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি ভূঁইয়া, বাংলার মিয়া ভাইখ্যাত চিত্র নায়ক ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন শরৎ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, মো. মোর্শেদ মোল্লা, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর যুব মহিলা লীগের আহবায়ক শর্মিলী দাস মিলি।
এদিকে, এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হক মিলন বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী। তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনে গাজীপুর-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারবেন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এলবার্ট ডি. কস্টা, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক শাফিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ছাত্রদল নেতা আহমেদ সাইমুম।
এই আসনে সাংগঠনিক ভাবে জাপার তেমন কোনো তৎপরতা নেই। তবে দলটি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যাও কম নয়। এই আসন থেকে মনোনয়ন চান কালীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি রাহেলা পারভিন শিশির, কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুর রহমান খান, মনজুরুল হক ও মিনহাজ আবেদিন বিশাল।
এই আসনে নির্বাচনের জন্য মাঠে রয়েছে জাকের পার্টির প্রার্থী। ইতিমধ্যে জাকের পার্টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ গাজীপুর-৫ আসনে জাকের পার্টি প্রার্থী হিসেবে জাকের পার্টি ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. জিয়াউর রহমান ফেলু হাজীর নাম ঘোষণা করেছেন। তিনি সেই লক্ষ্যে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন।
এছাড়াও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের জেলা সেক্রেটারী এডভোকেট আতিকুর রহমান, জামায়াতের গাজীপুর মহানগর সেক্রেটারী মো. খায়রুল হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র (চরমোনাই) গাজী আতাউর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) উর্মি বেগম সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন।
-আরএস/এমএ