শাশুড়িকে হত্যার ঘটনায় জামাইসহ আটক ২
Published : Tuesday, 7 November, 2023 at 7:42 PM Count : 392
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে শাশুড়ি চিন্তা ঋষি (৬৫) কে হত্যার ঘটনায় ঘাতক জামাইসহ দু'জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাতে দেবীগঞ্জ পৌর সদরে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রামের ঘাতক জামাই মুকুল রায় ও তার সহযোগী ডিমলা উপজেলার মহাদেব ঋষি (৩৭)।
মঙ্গলবার পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস (ক্রাইম অ্যাণ্ড অপস্) নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রায় ৬-৭ বছর আগে চিন্তা ঋষির মেয়ে রেনু ঋষির বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম এলাকার মুকুল চন্দ্র রায়ের সঙ্গে। বিয়ের পর রেনু জানতে পারেন তার স্বামীর আগের স্ত্রী রয়েছে। এতে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয় এবং রেনু তার স্বামীকে তালাক দিয়ে মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। এরপর আবার সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে রেনু ও মুকুল একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে রেনু কাজের উদ্দেশ্যে গাজীপুরে যায়। সেখানে আল-আমিন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তিনি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি রেনুর স্বামী মুকুল জানতে পারায় দু'জনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সম্প্রতি রেনু আল-আমিনকে নিয়ে তার মায়ের বাসায় বেড়াতে আসেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাদের হাতেনাতে ধরতে মুকুল চিন্তা ঋষির বাসায় আসেন। এদিকে মুকুল আসার আগেই রেনু ও আল-আমিনকে কৌশলে ভাগিয়ে দেন চিন্তা ঋষি। এ ঘটনায় চিন্তা ঋষি মেয়েকে সমর্থন করায় শাশুড়ি ও জামাইয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ফোনে রেনুকে ও তার মাকে হত্যার হুমকি দেয় মুকুল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩০ অক্টোবর সকাল অনুমানিক ৮টার দিকে চিন্তা ঋষির বাড়িতে আসেন মুকুল। দুপুরে ও রাতে খাওয়া দাওয়া করে রাতে মুকুল চন্দ্র রায় শ্বশুর বাড়িতেই থাকেন। মুকুল পূর্ব দিকের ঘরের বিছানায় এবং চিন্তা ঋষি পূজা করার ঘরের বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, ওইদিন দিবাগত রাত (৩১ অক্টোবর) আনুমানিক সাড়ে ১২টা থেকে ১টার দিকে মুকুল তার শাশুড়ির ঘরে গিয়ে ধারালো ছোড়া দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় চিন্তা ঋষির শ্বাসনালী কেটে দেয় এবং বুকে ও পেটের ডান দিকে কোপ দেয়। শাশুড়ির মৃত্যু নিশ্চিতের পর মুকুল বাসার টিউবওয়েলের ব্যবহৃত ময়লা পানির কুয়ায় মরদেহ ও রক্তে ভেজা কাঁথা ফেলে দিয়ে মাটি চাপা দেয়। সেই সঙ্গে পূজার ঘরের মেঝে লেপে দেয়। ভোর ৪টার দিকে মুকুল জলঢাকায় নিজ বাসায় ফিরে যান। এ ঘটনায় বৃদ্ধার মেয়ে রেনু ঋষি বাদি হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। সোমবার রাতেই তাদের দু'জনকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর থেকে চিন্তা ঋষি নিখোঁজ ছিলেন। সোমবার বৃদ্ধার নাতি জীবন এবং সৎ ছেলে নেপাল ঋষি দুপুরে বাসায় গিয়ে দেখতে পান সেপটিক ট্যাংকের আশপাশের মাটি আলগা। এরপর তারা বিষয়টি পুলিশকে জানালে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
-এইচসি/এমএ