আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজো ও মহালয়া উদযাপন উপলক্ষে দেবীদূত ছাত্র পরিষদের আয়োজনে ও নৃত্যাঙ্গনের পরিবেশনায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আগমনী অনুষ্ঠান ‘দশরুপে মহাজ্ঞানা’ শীর্ষক নৃত্যমালিকা মঞ্চায়িত হয়েছে। এতে দেবী দুর্গার ১০টি রুপ তুলে ধরা হয়।
রোববার রাতে শ্রীমঙ্গলস্থ মহসিন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে শুভ সূচনা করা হয়। এরপরে সারগাম সঙ্গীত বিদ্যালয়ের পরিবেশনায় আগমনী সঙ্গীতানুষ্ঠান (গীতি আলেখ্য: আজ আগমনীর আবাহনে কি সুর উঠেছে বেজে) পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মো. আব্দুস শহীদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, শ্রীমঙ্গল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সর্দার, কবি প্রফেসর নৃপেন্দ্র লাল দাশ, সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতি মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি জহর তরফদার, শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দীপ চান কানু, ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরী প্রমুখ।
নৃত্যমালিকা ‘দশরুপে মহাজ্ঞানা’র বিভিন্ন রুপে নৃত্য ও অভিনয়ে ছিলেন শিব রুপে সাজু দেব, দুর্গা রুপে টুম্পা দেব, সতী রুপে প্রজ্ঞা দাশ গুপ্তা, মহাকালী রুপে অংশিতা রায় অথৈ, তাঁরা কালী রুপে তিতলী দে, ষোড়শী রুপে অগ্নীলা ধর, ভূবনেশ্বরী রুপে তিথি দেব পূজা, ভৈরবী রুপে শ্রীজিতা দেব প্রাপ্তি, ছিন্নমস্তা কালী রুপে সংগীতা দেব, ধূমাবতী রুপে নিলীমা বৈদ্য, বগলামূখী রুপে শ্রেয়া সেন, মাতঙ্গী রুপে সঞ্চিতা দেব শশী, কমলা কালী রুপে সৃষ্টি চন্দ শ্যারণ, পার্বতী রুপে প্রমিতা রায় রিয়া, অসুর রুপে অদ্রি বর্মন, দিপক চক্রবর্তী, বিপ্লব দেব আবু।
এছাড়াও সহশিল্পী হিসেবে ছিলেন মন্দিরা, শ্রীজিতা, পুতুল, আভা, মেধা, পৃথিবী, তৃষা, পামথৈ, প্রজ্ঞা, শ্রুতি প্রমুখ।
তাঁরা কালী রুপে অভিনয় করেন তিতলী দে। তিনি ডেইলি অবজারভারকে বলেন, ‘আমি দেবীদূত ছাত্র পরিষদের আয়োজনে ‘দশরূপে মহাজ্ঞানা’ নামক নৃত্যমালিকায় দেবী তাঁরিনী রূপে ছিলাম। প্রতিবারের মতো এবারও আমি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং আমার অনেক ভালো লাগছে অংশগ্রহণ করতে পেরে। দর্শকদের উপস্থিতি এবং তাদের প্রতিক্রিয়া মুগ্ধ করার মতো ছিল।’
নৃত্যাঙ্গনের পরিচালক সাজু দেব ডেইলি অবজারভারকে বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় দেবীপক্ষে শ্রীমঙ্গলে কিছু আয়োজন থাকে, এ বছরও হয়েছে। খুব অল্প সময়ে সবাই এই আয়োজনটা তুলেছি। আমরা খুবই ব্যস্থ, কিছু কিছু শিক্ষার্থীরা বাইরে রয়েছে। ফাইনাল পরীক্ষা, চাকরিতে কর্মরত, কিন্তু ভালো লেগেছে আমার যে, তাদেরকে ডাকা মাত্রই তারা সকল কাজ উপেক্ষা করে চলে এসেছে। সত্যি কথা বলতে গেলে আমরা তিন দিন রিহার্সাল করেছি। তিন দিনের রিহার্সালে আমরা স্টেজে পারফর্ম করেছি। দর্শকের সমাগম ছিল খুবই ভালো। কানায় কানায় ভরপুর ছিল দর্শক, এতে মনে হয়েছে আমাদের কষ্ট স্বার্থক হয়েছে। আশা করি আমরা প্রতি বছর এ রকম একটা কিছু শ্রীমঙ্গলবাসীকে উপহার দিতে পারবো। সবাই আমাদের পাশে থাকবেন।’
দেবীদূত ছাত্র পরিষদের সদস্য সুদীপ্ত কালোয়ার দ্বীপ ডেইলি অবজারভারকে বলেন, ‘আমাদের সংগঠন থেকে মহালয়া উপলক্ষে এ রকম একটা অনুষ্ঠান করার চিন্তা-ভাবনা ছিল, সবাই মিলে একটা মিটিং করে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। আমরা ভেবেছিলাম নিজেরাই অনুষ্ঠানটা করবো। কিন্তু বড় পরিসরে করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সহযোগিতা নিতে হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ভেবেছি, এক সপ্তাহের মধ্যেই আমরা শুরু করে দিয়েছি। এমন অনুষ্ঠান ধারাবাহিক ভাবে আমাদের প্রতি বছরই করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।’
-আরএ/এমএ