মাদ্রাসাছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষক কারাগারে
Published : Tuesday, 12 September, 2023 at 8:32 PM Count : 279
পাবনার সাঁথিয়ায় আসাদুল নামের এক মাদ্রাসাছাত্রকে হাত-পা বেঁধে বেধরক মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সোমবার রাতে মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে সোমবার রাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই শিক্ষককে আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা।
গ্রেপ্তারকৃত শাহাদৎ হোসেন (১৯) বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার পূর্বধারাবর্ষা গ্রামের বাসিন্দা।
মূল নির্যাতনকারী শিক্ষক ইকবাল হোসেন (২২) পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের হাড়িয়াকাহন বাইতুল উলুম নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন শিবরামপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল (১০) অসুস্থতার কারণে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকায় বাড়িতে অবস্থান করে। গত ০৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থী সজীব (১৩) ও সিয়াম (১০) কে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষক ইকবাল হোসেন আসাদুলকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় ডেকে আনেন।
অনুপস্থিত থাকার অপরাধে আসাদুলকে গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক শাহাদৎ হোসেনের সহযোগিতায় রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে, মাথা টেবিলের নিচে দিয়ে কোমড়ের নিচে বেত এবং স্টিলের স্কেল দিয়ে বেধরক মারপিট করে জখম করে। একপর্যায়ে আসাদুল অচেতন হয়ে যায়। সে সময় তাকে কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। আসাদুলের মা শোভা খাতুন খবর পেয়ে মাদ্রাসায় ছুটে যান। গিয়ে ছেলেকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে দেখতে পান মাদ্রাসার কক্ষে হাত পা বাঁধা অবস্থায় কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই দিন রাত ১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি করেন।
নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা ভ্যানচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে অমানবিক ভাবে মারধর করে জখম করার বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা চিকিৎসার খরচ বাবদ দুই হাজার টাকা দেন এবং ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিয়ে মামলা করতে নিষেধ করেন। ন্যায় বিচার না পেয়ে টাকা ফেরৎ দিয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে ছেলেকে বাড়িতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারকে থানায় মামলা করতে নিষেধ করার ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী বলেন, আমরা ওই শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কারের (ইস্তফা) ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মামলা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাবে। ফলে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্ন হবে এবং প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ভর্তির ওপড় প্রভাব পড়বে বা ছাত্র পাওয়া যাবেনা। শিক্ষার্থীর চিকিৎসা বাবদ খরচ দেওয়া হয়েছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক শাহাদৎ হোসেনকে গত সোমবার রাতে মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর শিক্ষক ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
-জেইউ/এমএ