বিএনপি এখন অন্তর্জালায় মরছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার দুপুর ১টার দিকে বরগুনা সার্কিট হাউজ ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগের ৮ম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপির অন্তরে জ্বালা, পদ্মা সেতু হয়েই গেল। পদ্মা সেতু ঠেকাতে পারেনি। বলেছিল, জোড়াতালির পদ্মা সেতু, উপরে উঠলে ভেঙে পড়ে যাবে। এখন যে এদিক ওদিক যাতায়াত করেন শরম লাগে না, লজ্জা লাগে না! পদ্মা সেতু ঠেকাতে পারেনি। এখন জ্বালা হচ্ছে এটা। পায়রা সেতু হয়ে গেছে, কুয়াকাটায় তিন সেতু হয়ে গেছে। ঢাকায় মেট্রোরেল তৈরি হয়ে আছে। চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টালেন রেডি। এসব দেখে ফখরুলের মন খারাপ।'
তিনি বলেন, 'মির্জা ফখরুল বলেন- আমরা না কি কাপুরুষ। সে জন্য তাদের মামলা মোকদ্দমা দিয়েছি। কাপুরুষ কি আমরা না কি বিএনপি। হাওয়া ভবনের যুবরাজ বসে আছে টেম্পস নদীর পাড়ে, আর বস্তায় বস্তায় দুবাই থেকে টাকা পাঠাচ্ছে। টাকা উড়ে আকাশে, টাকা উড়ে বাতাসে। ফখরুল টাকার বস্তার উপরে বসে আছে, দিতে দিতে খালি, এখন গলার জোরটা একটু কমে গেছে। এখন তিনি ডিফেন্সিভ মুডে আছেন। এখন আর আক্রমণাত্মক গলার সুর নেই।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির ফাকা বুলিতে আওয়ামী লীগ ভয় পায় না, দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে, ডিসেম্বরে খেলা হবে, নির্বাচনে খেলা হবে।'
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা তৈরি থাকবেন, প্রস্তত থাকবেন। গোটা ডিসেম্বর মাস, পুরো বিজয়ের মাস আপনাদের মাঠে থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাক দেবেন। আপনারা প্রস্তত থাকবেন। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, ভুয়া ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে আন্দোলনে খেলা হবে।’
বামপন্থিদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাগল তো নাচে, সঙ্গে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চাও লাফায়। সে কি লাফ। বাম রাজনীতি করে, আদর্শের কথা বলে, খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলে। এরা আবার হাওয়া ভবনের যুবরাজের সঙ্গে তার নেতৃত্বে আন্দোলনে যোগ দিতে চায়। খেলা তো হবে। কোথায় গেল আদর্শ। ঢাল নাই, তলোয়ার নাই, নিধিরাম সর্দার। তারাও এখন আন্দোলনের ভয় দেখায়। জিরোর সঙ্গে জিরো যোগ করলে যা হয় তাদের অবস্থাও তাই।’
জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ ঘোষণা করব। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দেবেন। সবাই এক হয়ে কাজ করব। তবে দলে দুর্নীতিবাজ, মাদকসেবীদের আশ্রয় দেবেন না।’
‘’
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের ৮ম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক নিরীক্ষণ কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ।
বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ৮ম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য গোলাম রব্বানী চিনু, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মো. আনিসুর রহমান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের জ্যেষ্ঠ সদস্য ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এমপি।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নাদিরা সুলতানা প্রমুখ।
এছাড়াও, সম্মেলনে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির।
পরে বিকেলে সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন শেষে বরগুনা -১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপিকে সভাপতি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব জাহাঙ্গীর কবীরকে সাধারণ সম্পাদক ও গোলাম সরোয়ার টুকুকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
-এমএম/এমএ