ফুলবাড়ীতে ধরলার তীব্র ভাঙ্গণ অব্যাহত
Published : Wednesday, 12 October, 2022 at 9:33 PM Count : 65
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ধরলার তীব্র ভাঙ্গণ অব্যাহত রয়েছে। গত এক সপ্তাহে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডল এলাকায় ধরলার তীব্র ভাঙ্গণে ১০টি বাড়ি-ঘর, আধা কিলোমিটার সড়কসহ ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় চার শতাধিক পরিবার।
অন্যদিকে, উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম এলাকার ধরলার ওপারে সাতটি বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি ধরলায় বিলীন হয়েছে। সেখানেও হুমকির মুখে শতাধিক পরিবার। ধরলার তীব্র ভাঙ্গণ দেখা দেওয়ায় উপজেলার চরগোরকমন্ডল ও ধনিরাম এলাকার শতশত পরিবার আতংকে দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙ্গণের প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে চর-গোরকমন্ডল এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড দুই হাজার ২০০ জিও ব্যাগ দিয়ে মাত্র ৩০০ গজ এলাকা ভাঙ্গণ ঠেকানো হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে ধরলার তীব্র ভাঙ্গণ দেখা গেলে ধরলা পাড়ের মানুষ আতংকে দিন কাটাচ্ছেন। দ্রুত ভাঙ্গণ রোধের ব্যবস্থা না করলে চর-গোরকমন্ডল গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশংকা করছে স্থানীয়রা। ভাঙ্গণরোধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
চর গোরকমন্ডল এলাকার আজিজুল ইসলাম ও মাইদুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে এই এলাকায় ধরলা নদীর ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। গত আড়াই থেকে তিন মাসে প্রায় ৩০টি পরিবার, ভুট্টা, আঁখসহ বিভিন্ন ফসলি জমি, বাগান ও বাঁশ ঝাঁড় নদী গিলে খেয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ দিয়ে মাত্র ৩০০ গজ এলাকার ভাঙ্গণ ঠেকালেও গত এক সপ্তাহে ধরলার তীব্র ভাঙ্গণে ৮ থেকে ১০টি বাড়ি-ঘরসহ একমাত্র সড়কটির বড় অংশ নদীতে চলে গেছে। ভাঙ্গণরোধ করতে না পারলে আবারও বাড়ি, ভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হবে।
বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিবার ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমার এই গ্রামটি ধরলা নদীর দুই পাড়ে তীব্র ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। ধরলার পূর্ব পাড়ে দুই কিলোমিটার জুড়ে ভাঙ্গণ রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা এখনও চলমান আছে।
তার দাবি, ধরলার পশ্চিম পাড়ে কয়েক দিনের তীব্র ভাঙ্গণে সাতটি বাড়ি-ঘর ও শত শত বিঘা ফসলি জমি ধরলার গর্ভে বিলীন হয়েছে। সেই সঙ্গে ভাঙ্গণ হুমকিতে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী বলেন, চর গোরকমন্ডল এলাকার নদী ভাঙ্গণ উদ্বেগজনক। ভাঙ্গণ প্রতিরোধে ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে আবেদনটি সংসদ সদস্যের সুপারিশসহ কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে দেওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড দুই হাজার ২০০ জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গণ ঠেকানোর চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, চর-গোরকমন্ডল এলাকায় ভাঙ্গণ ঠেকাতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ হাজার জিও ব্যাগের প্রয়োজন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম এলাকায় দুই কিলোমিটার জুড়ে ভাঙ্গণ রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ চলমান আছে। সেই সঙ্গে ধরলা ভাঙ্গণ ঠেকাতের চর-গোরকমন্ডল এলাকাতেও আপাতত দুই হাজার ২০০ জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গণ রোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর রাখছি। সেই সঙ্গে চরগোরকমন্ডল এলাকায় ভাঙ্গণ দেখা দেওয়ায় দ্রুত ভাঙ্গণ প্রতিরোধের জন্য পানি উন্নয়ন কাজ করবে।
-এসি/এমএ