For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

সোমবার পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

Published : Sunday, 20 March, 2022 at 11:38 AM Count : 98

দেশের সর্ববৃহৎ এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন হতে যাচ্ছে সোমবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বশরীরে উপস্থিত থেকে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উদ্বোধন করবেন। পরে সেখানে একটি মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়েছে সাগরকন্যা পটুয়াখালী। করোনা মহামারীর পর প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা। 

বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নর্থওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি কর্পোরেশন (সিএমসি) এর মধ্যে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

নির্মাণ শুরুর পর ২০২০ সালের ১৫ মে প্রথম ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)। পরে একই বছরের ০৮ ডিসেম্বর আল্ট্রা সুপার প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। 
এক হাজার একর জমির উপর নির্মিত এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রেটির প্রথম ফেজ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে দুই দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার।
প্রতিদিন এ কেন্দ্র চালু রাখতে প্রয়োজন হবে ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। এ কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় ফেজে আরও এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট অর্থাৎ দুই হাজার ৬৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে ২০২৪ সাল নাগাদ যুক্ত হবে বলে আশাবাদী কোম্পানী সংশ্লিষ্টরা।

পায়রা এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্লান্টের প্রকল্প পরিচালক শাহ মোহাম্মদ গোলাম মাওলা সাংবাদিকদের বলেন, কোভিড মহামারীর প্রতিকূলতার মধ্যেও কোন রকম ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রথম ফেজে দুটি ইউনিটকে উৎপাদনে আনতে সক্ষম হয়েছি। তিনি দাবি করেন, দুই দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পে একশ মিলিয়ন ডলার কম খরচ হয়েছে। বর্তমানে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদনে সক্ষম হলেও সঞ্চালন লাইনের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় পুরো এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে দিতে পারছি না। পায়রা থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হলেও গোপালগঞ্জ থেকে আমিন বাজার পর্যন্ত লাইনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে লাইনের কাজ শেষ হলে পুরো এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী রেদোয়ান আহমেদ বলেন, প্রতিদিন পায়রা পাওয়ার প্লান্টে ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন হবে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ যদি তাদের ৮০ কিলোমিটার চ্যানেল ড্রেজিং করে সচল না রাখে তাহলে লাইটারেজ জাহাজে কয়লা মাদার ভ্যাসেল থেকে আনতে হয়। সে ক্ষেত্রে কয়লার মূল্য বেড়ে যায়। চ্যানেল সচল রাখতে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাই।

এদিকে, করোনা মহামারীর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বশরীরে পটুয়াখালী আসবেন এমন খবরে উচ্ছাসিত এখানকার সাধারণ মানুষ। তাঁকে বরণ করতে প্রস্তুত জেলাবাসী। ইতিমধ্যে তার আগমনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়েছে পুরো জেলা। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে ২২০টি নৌকাকে সজ্জিত করা হয়েছে বর্ণিল সাজে। রামনাবাদ নদীর মোহনায় এ  নৌকা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিভাদন জানাবেন উপকূলের প্রায় এক হাজার একশ মানুষ। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও ফটো সাংবাদিক আরিফুর রহমান বলেন, উন্নয়নের প্রতীক নৌকা সজ্জিত করার কাজ শেষ। এখন সেগুলো রামনাবাদ চ্যানেলের জেটির নিকটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে সোমবার প্রধানমন্ত্রীকে অভিভাদন জানানো হবে। বরিশাল চারুকলার ২০ জন শিক্ষার্থী এ নৌকাগুলোকে সজ্জিত করেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব কাজী আলমগীর বলেন, প্রত্যাশা ছিল জননেত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীতে একটি জনসভা করবেন। প্রথমে কর্মসূচির মধ্যে এটি থাকলেও পরে তা বতিল করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলটি তৃতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হবে। 

তিনি বলেন, পায়রা সেতু, কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র এবং প্রস্তাবিত ইপিজেড এ অঞ্চলের চেহারা পাল্টে দেবে। পটুয়াখালীবাসীর পক্ষ থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। নিরাপত্তা পরিকল্পনার মধ্যে কোভিড প্রটোকলও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতে যারা অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন তাদের অবশ্যই করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, শুধু পায়রা এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন নয় ওইদিন প্রধানমন্ত্রী দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে একটি মতবিনিময় সভায় বক্তব্য প্রদান করবেন। এ সফরে চায়নাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রী পরষিদের সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তাসহ পাঁচ শতাধিক সদস্য উপস্থিত থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।

-এমপি/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,