রাশিয়ায় বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এছাড়া দেশটিতে ‘ভুয়া’ প্রতিবেদন ছড়ানোকে অপরাধ গণ্য করে একটি আইন পাস করা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
যেগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে- ফেসবুক, টুইটার, ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি, মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা, রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি, জার্মান ডয়েসে ভেলে এবং লাটভিয়া ভিত্তিক ওয়েবসাইট মেডুজা।
রাশিয়ার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ রোসকমনাদজর শুক্রবার জানায়, তারা প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়ের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টুইটার ও ফেসবুক বন্ধ করেছে। এর আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি টুইটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল- টুইটার রুশ সরকারের নিষিদ্ধ করা কনটেন্ট মুছে ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যজুড়ে একাধিক রুশ সংবাদ মাধ্যমের পেজ সরিয়ে দেয় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম। এর পরেই বিষয়টি রোসকমনাদজরের নজরে আসে। ফেসবুকের ওপর ‘বদলা’ নিতেই রাশিয়া এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে একাধিক সংবাদ মাধ্যম।
এছাড়া, যুদ্ধ সংক্রান্ত ‘ভুয়া খবর’ ছড়ানোকে অপরাধ গণ্য করা হবে বলে শুক্রবার একটি বিল পাস করে রুশ সরকার।
ফেসবুকের ওপর বৈষম্যের অভিযোগ এনে রোসকমনাদজর এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘২০২০ সালের অক্টোবর থেকেই রাশিয়ার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে ফেসবুক। এছাড়া রাশিয়া টুডে’র মতো বিখ্যাত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের পেজকেও ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ফেসবুক রুশ নাগরিকদের অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘন করছে বলে গত সপ্তাহে অভিযোগ করেছিল রাশিয়া। পাশাপাশি রাশিয়াজুড়ে ফেসবুকের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা ঘোষণা করে রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা’র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান নিক ক্লেগ জানান, এ পদক্ষেপের মাধ্যমে সাধারণ রুশ নাগরিকদের নির্ভরযোগ্য ও সঠিক তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত করল রাশিয়া সরকার। মানুষের কণ্ঠরোধ করা হলো বলেও তার দাবি। তবে, মেটার পক্ষ থেকে শিগগিরই আবার সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।
অন্যদিকে, শুক্রবার বিকেলে টুইটার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ায় তাদের প্ল্যাটফর্ম বন্ধের বিষয়ে অবগত।
এদিকে, রুশ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে পাস হওয়া নতুন আইনে বলা হয়েছে- রুশ সামরিক বাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা সংবাদ ছড়ানোর দায়ে তিন বছর পর্যন্ত সাজা বা জরিমানা এবং ‘গুরুতর’ ক্ষেত্রে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভোলোডিন বলেছেন, এ ব্যবস্থা ‘যারা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে অসম্মান করে এমন বিবৃতি দিয়েছে তাদের কঠোর শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করবে।’
এর আগে বিবিসির মার্কিন সম্প্রচার অংশীদার সিবিএস নিউজ এবং আরেক প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ, বিবিসি, সিএনএন ও ব্লুমবার্গ রাশিয়ায় তাদের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে।
-এমএ