ঝিনাইদহে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোববার বিকালে জেলার হরিণাকুন্ডু ও সদর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে এ ক্ষতি হয়।
বিগত ১০/১৫ বছরেও এত শিলাবৃষ্টি দেখেনি ঝিনাইদহবাসী। ঝিনাইদহে রেকর্ড পরিমাণ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে তা জানাতে পারেনি কৃষি বিভাগ।
ডাকবাংলার পোতাহটি গ্রামের গিয়াস উদ্দীন সেতু বলেন, ঝিনাইদহে হঠাৎ ঝড় শীলা বৃষ্টিপাতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গম, মশুড়ী, ভুট্টা, পান ও আমের মুকুলের। ডাকবাংলা এলাকার পাশ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের মাটিতে নুয়ে পড়েছে গম, ভেঙে গেছে ভুট্টা ক্ষেত, ঝরে পড়েছে আমের মুকুল। কোনো কোনো স্থানে পানের বরজের চালা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বৃষ্টিতে ফুলকপি, শিমসহ অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতির শঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
ডাকবাংলার সুমন আহমেদ বলেন, হঠাৎ ঝড় ও শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। শিলার পরিমাণ এতই বেশি ছিল যা বিগত ১০/১৫ বছরেও এত শিলাবৃষ্টি হয়নি। শিলা বৃষ্টির কারণে ডাকবাংলা অঞ্চলের সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ডাকবাংলাতে রেকর্ড পরিমাণ শিলাবৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি আরো জানান।
বিষয়খালি এলাকার বসির উদ্দীন বলেন, বিষয়খালী অঞ্চলে ঝড় বৃষ্টির সাথে প্রচুর পরিমাণে শিলা বৃষ্টি হয়। শিলের পরিমাণ এতই বেশি ছিল যে স্তুপে পরিণত হয়েছিলো। বিষয়খালী অঞ্চলের বিষয়খালী, কেশবপুর,কানুহারপুর,হরিপুর, মহারাজপুর, পরমানন্দপুর, তেঁতুলতলা, মায়াধরপুর, কুলফাডাঙ্গা, রামনগর, খামার আইনসহ আশেপাশের এলাকায় প্রচুর পরিমাণে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড় হয়। চলতি মৌসুমের ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
চোরকোল প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক বলেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটী ইউনিয়নের জিয়ালা গ্রামও আশপাশের অনেক গ্রামের কৃষকের ফসলসহ ঘর বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সাদ আহমেদ বিশ্বাস জানান, হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে তার এলাকার কৃষক অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আমার দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা ছিল। এই ঝড়ে ক্ষেতের এক-তৃতীয়াংশ গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এছাড়াও মাঠের মশুর, গম ও আমের মুকুলের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
হরিনাকুন্ডু উপজেলার গবরাপাড়া গ্রামের আলম মেম্বার ও আবুল কালাম বলেন, লিচু এবং আম গাছের মুকুল বড় বড় শিলার আঘাতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। তা ছাড়া মাঠের অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। যা আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আজগর আলী বলেন, ক্ষণস্থায়ী শীলাবৃষ্টিতে ফসলের অনেক ক্ষতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করার জন্য। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে কয়েকদিন পর জানা যাবে। তবে কৃষক যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে ফসলের ক্ষতির সম্ভবনা কম হবে বলে তিনি আরো জানান।
-জেডইউ/এনএন