রাজশাহীতে ওসির বিরুদ্ধে হত্যা মামলার এজাহার পরিবর্তনের অভিযোগ
Published : Tuesday, 21 December, 2021 at 5:41 PM Count : 117
এবার রাজশাহীর চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে হত্যা মামলার এজাহার পরিবর্তনের অভিযোগ উঠেছে। মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত শিলন মিয়া হত্যা মামলায় পরিবর্তন করে ১৫ আসামিকে বাদ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন নিহত শিলন মিয়ার পরিবার।
মাহানগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত শিলনের বাবা ও মামলার বাদী রিয়াজ আলী জানান, তার ছেলের হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামিদের আড়াল করতে ওসি জাহাঙ্গীর আলম মামলার এজাহার পরিবর্তন করেছেন। তাদের অভিযোগে হত্যায় অংশ নেওয়া ২০ জনের নাম ছিলো। কিন্তু ৫ জনকে আসামি করে চারঘাট থানার ওসি আমার কাছে মামলায় স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করেন।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর আমাকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমি ২০ জনকে আসামি করে হত্যার অভিযোগ করি। কিন্তু যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ওসি চান সেই ৫ জনকেই আসামি করে মামলা করতে। ওসির করা এজাহারে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের আসামি করে সেখানে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিয়াজ আলী আরো বলেন, মামলা পরিবর্তন ছাড়াও ওই ৫ জনের বাইরে কাউকে আসামি করা যাবে না, এই মর্মে ওসি জাহাঙ্গীর আলম আমার কাছে থেকে মুচলেকায় স্বাক্ষর নিয়েছে। তার কথার বাইরে কিছু করলে আমার ছোট ছেলেকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ারও হুমকি দেন ওসি।
এছাড়া মামলায় যিনি এক নম্বর আসামি তার নাম নিচে এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি যারা জড়িত তাদের নাম মামলার এজাহারে নেই। আমি এজাহারের কপি চাইলে ওসি আমায় কোনো কপি দেননি। হত্যাকারী সম্রাট রক্তমাখা কাপড় পরে থাকলেও পুলিশ সেই কাপড় খুলে তাকে ভালো কাপড় পরিয়ে বাসা থেকে বের করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, নিহত শিলনের স্ত্রী আলেয়া বেগম ও দুই সন্তান, ছোট ভাই ইবরাহিম আলী রতন।
হত্যা মামলার এজাহার পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ওসি জাহাঙ্গীর আলম কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
প্রসঙ্গত, গত রোববার বিকেলে চারঘাটের জিকরা গ্রামে মাদক নিয়ে বিরোধের জের ধরে শিলন মিয়াকে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় নিহতের পিতা রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাতে অভিযান চালিয়ে সম্রাটসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব ও পুলিশ।
গ্রেফতরকৃতরা হলেন, একই এলাকার সম্রাট, জুয়েল রানা, হাসান আলী, জনি হোসেন ও রাসেল মিয়া। তাদের কাছ থেকে এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল ও হাসুয়া উদ্ধার করেছে র্যাব সদস্যরা।
এর আগে ২০১৯ সালে একটি হত্যা মামলার পরিবর্তনের অভিযোগ উঠে পুঠিয়া থানার তৎকালিন ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে। এর পর তিনি বরখাস্ত হন এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। গত ১২ ডিসেম্বর তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠায়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
-আরএইচ/এনএন