কাশবনের রাজ্যে আগুন
Published : Tuesday, 5 October, 2021 at 12:08 PM Count : 208
সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আগুনে কাশবন ক্রয় করা শ্রমিক ও মালিকের কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ভবনাথপুর ও কান্দারগাঁও এলাকার কাশবনটি প্রতি বছরের ন্যায় এবার ক্রয় করেন ভোলার জাহাঙ্গীর সরদার। তারা কাশবন কেটে বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রয় করেন। কাশ গাছ বিভিন্ন পানের বরজের মাচায় ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করতে কিনে নেন ব্যবসায়ীরা। জাহাঙ্গীর সরদার এক লাখ ৫০ হাজার টাকায় কাশবনের একাংশ ক্রয় করে ১৮ জন শ্রমিক দিয়ে ১৪ দিন ধরে কাশবন কেটে শুকাচ্ছিলেন। সোমবার রাতে একদল দুর্বৃত্ত কাশবনে আগুন ধরিয়ে দিলে নিমিষেই তাদের কেটে রাখা কাশবনসহ পুরো বনে আগুন ধরে যায়। পরে শ্রমিকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
কাশবন কাটতে আসা শ্রমিকরা জানান, স্থানীয় কান্দারগাঁও এলাকার চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ করতে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে থাকা একদল যুবক কাশবনে আগুন দিয়েছে। শ্রমিকরা বাধা দিলে তাদের প্রচণ্ড মারধর করে চলে যায়। দুর্বৃত্তদের নাম না জানলেও তাদের দেখলে চিনতে পারবেন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানান, সন্ধ্যার পর এলাকায় প্রচণ্ড ধোঁয়া দেখে আমরা আসি। ততক্ষণে শ্রমিকরা আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ কাশবনটির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে সপরিবারে অনেক পর্যটক আসেন। এ এলাকাটি এখন পর্যটক মুখরে পরিণত। এ এলাকাকে সবাই কাশবনের রাজ্য বলে চেনে। আগুন দেওয়ায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের যেমন ক্ষতি হয়েছে তেমনি নিরাপত্তার অভাবে এলাকায় পর্যটক আসা কমে যাবে। কাশবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসায় এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অনেক লাভবান হতো।
অসহায় শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন ৬০০ টাকা হাজিরায় তারা ভোলা থেকে এসে এখানে কাজ করছেন। ১৪ দিনে তাদের খোরাকি ছাড়া কিছুই পাননি। আগুন দিয়ে মহাজনের যে ক্ষতি করেছে এতে তাদের পরিশ্রমের টাকা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
সম্প্রতি উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরবতী কান্দারগাঁও, ভবনাথপুর ও ভাটিবন্দর এলাকার ইউনিক গ্রুপের বালুর মাঠে বড় একটি কাশবন সৃষ্টি হয়। বিশাল এলাকা জুড়ে এ কাশবনকে কাশবনের রাজ্য হিসেবে চেনে সবাই। এ বছর ব্যাপক হারে কাশবন হওয়ার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা ছড়িয়ে ভাইরাল হয়। এর ফলে পুরো উপজেলার প্রকৃতিপ্রেমীরা সময় কাটাতে এখানে ছুটে আসেন। শুক্রবারসহ ছুটির দিনগুলোতে হাজারো দর্শাণার্থীর ঢল নামে এখানে।
হাসান মাহমুদ রিপন
সোনারগাঁও