For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

পাঞ্জশিরে বেসামরিক লোকজন হত্যা করেছিল তালেবান : বিবিসি

Published : Tuesday, 14 September, 2021 at 10:17 AM Count : 501

আফগানিস্তানের পাঞ্জশির উপত্যকায় অন্তত ২০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

পাঞ্জশিরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তালেবানের সঙ্গে সেখানকার বিরোধী বাহিনীর সঙ্গে তুমুল লড়াই হয়েছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, পাঞ্জশির উপত্যকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে সেখানে সংবাদকর্মীদের পক্ষে কাজ করে কঠিন হলেও তাদের কাছে তালেবানের সংযমের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও চালানো হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ রয়েছে।

পাঞ্জশিরের একটি ধুলোমাখা রাস্তার পাশের ফুটেজে দেখা গেছে- সামরিক সরঞ্জাম সংবলিত পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে তালেবান যোদ্ধারা ঘিরে রেখেছে। এরপর গুলির শব্দ শোনা যায় এবং ওই ব্যক্তিকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখা যায়।
তবে, নিহত ওই ব্যক্তি সেনাবাহিনীর সদস্য কি না, তা স্পষ্ট নয়। কেননা, পাঞ্জশিরের বাসিন্দাদের মধ্যে যুদ্ধের পোশাক পরার চল রয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়- একজন প্রত্যক্ষদর্শী নিজেকে বেসামরিক নাগরিক বলছেন।

বিবিসি বলছে, পাঞ্জশিরে এ ধরনের ঘটনায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে।

নিহতদের একজনের নাম আবদুল সামি। দুই সন্তানের পিতা সামি পেশায় ছিলেন দোকানদার।

স্থানীয় সূত্র জানায়, তালেবানকে আসতে দেখে সামি পালিয়ে না গিয়ে তাদের বলেছিলেন : ‘আমি নিতান্ত দরিদ্র এক দোকান মালিক, যুদ্ধের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই।’

কিন্তু, তালেবানবিরোধী যোদ্ধাদের কাছে সিম কার্ড বিক্রির অভিযোগে সামিকে গ্রেফতার করে তালেবান। কয়েক দিন পর সামির লাশ তাঁর বাড়ির কাছে পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সামির মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল।

গত মাসে যখন তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে, তখন কেবল পাঞ্জশির তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না।

আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন প্রতিরোধের কেন্দ্র ছিল এই পাঞ্জশির উপত্যকা। সেখানকার প্রতিরোধ বাহিনী অতীতে কমান্ডার আহমদ শাহ মাসউদের নেতৃত্বে সাবেক সোভিয়েত বাহিনী ও তালেবানকে পাঞ্জশির থেকে বিতাড়িত করেছিল। পাহাড়ে ঘেরা থাকায় সাবেক সোভিয়েত বাহিনী ও তালেবান পাঞ্জশির উপত্যকা দখল করতে ব্যর্থ হয়।

মাসউদের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে আহমদ বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। তালেবান দ্বিতীয় দফায় আফগানিস্তানজুড়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে একের পর অঞ্চল নিজেদের হাতে নেওয়া শুরু করলে আহমদ পাঞ্জশিরে তালেবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। 

কিন্তু, গত সপ্তাহে তালেবান পাঞ্জশির উপত্যকায় নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করে। ভিডিও ফুটেজে তালেবান যোদ্ধাদের পাঞ্জশিরে নিজেদের পতাকা উত্তোলন করতে দেখা গেছে।

তবে, হার না মানা প্রতিরোধ বাহিনী পাঞ্জশিরে লড়াই জারি রাখবে বলে জানিয়েছে। আহমদ মাসউদ তালেবানদের বিরুদ্ধে ‘জাতীয় অভ্যুত্থানের’ ডাক দিয়েছেন।

তালেবানরা আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর, এখন দেখার বিষয়- আফগানিস্তানের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পাঞ্জশিরে এরপর কী ঘটে।

পাঞ্জশিরে ঢোকার সময় তালেবান উপত্যকার বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন চালিয়ে যেতে বলেছিল।

তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র মৌলভি আবদুল্লাহ রাহমানি বলেছিলেন, ‘তাদের (পাঞ্জশিরবাসী) বাইরে আসা উচিত, নিজেদের দৈনন্দিন কাজকর্ম করা উচিত।’

মৌলভি আবদুল্লাহ রাহমানি আরও বলেছিলেন, ‘দোকান মালিকরা দোকানে যেতে পারেন। কৃষকরা তাঁদের খামারে যেতে পারেন। আমরা এখানে তাদের, তাদের জীবন এবং তাদের পরিবারের সুরক্ষা দিতে এসেছি।’

কিন্তু বিবিসি জানিয়েছে, বাস্তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। একটি ফুটেজ দেখা গেছে- এক সময়ের ব্যস্ত বাজারগুলো জনশূন্য। লোকজন পালানোর চেষ্টা করছে। এবং উপত্যকার খাড়া চূড়ার নিচে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে।

এছাড়া পাঞ্জশিরে খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতির সতর্কতাও জারি করা হয়েছে।

তবে, তালেবান পাঞ্জশিরে বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করার কথা অস্বীকার করেছে। কিন্তু, উপত্যকার হাজারা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালানো এবং একজন নারী পুলিশ সদ্যসের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন সামনে আসার পর, বলা যায়- সেখানকার বাস্তবতার সঙ্গে তালেবানের প্রতিশোধমূলক হামলা না করার প্রতিশ্রুতির মিল নেই।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্যাট্রিসিয়া গ্রসম্যান বলেন, ‘আমরা এর আগেও আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে একই ধরনের ঘটনার তথ্য (হত্যাকাণ্ড বা হামলা বা নিপীড়ন) হাতে পেয়েছি।’

‘জুলাই-অগাস্টে তালেবান যখন কাবুলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, তখন আমাদের কাছে একই ধরনের তথ্য এসেছিল। এবং আমরা একাধিক সাবেক নিরাপত্তাকর্মী, সরকারের সাবেক সদস্য এবং বেসামরিক লোকদের দোষী সাব্যস্ত করে প্রকৃত ন্যায় বিচার ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার তথ্য জানতে পারি। এসব মৃত্যুর কোন কোনটি প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড। 

পাঞ্জশিরেও একই ঘটনা ঘটছে বলে মনে হচ্ছে’, যোগ করেন প্যাট্রিসিয়া।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,