বাউফলে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর হদিস নেই
Published : Monday, 6 September, 2021 at 9:38 PM Count : 192
আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অথচ কোন পূর্ব প্রস্ততি নেই পটুয়াখালীর
বাউফলের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এদিকে করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে বাউফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ হাজার শিক্ষার্থীর হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো থেকে ঝড়ে পড়া এসব শিক্ষার্থীর তথ্য চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, টানা দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় খোলার খবরে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করলেও বাউফলের অধিকাংশ বিদ্যালয় খোলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন প্রস্ততি নেয়া হয়নি। বাউফল উপজেলায় মোট ২৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬৭টি দাখিল মাদ্রাসা ও ১০টি কলেজ রয়েছে।
সোমবার সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, সূর্যমণি ইউনিয়নের পূর্ব ইন্দ্রকুল চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাজেমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন ভবন নেই। ১ বছর আগে ইন্দ্রকুল চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ভেঙে আরেকটি নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। পুরানো ভবন ভাঙার পরই স্থানীয় যুবলীগ নেতা জাকির মৃধা তার পৈত্রিক সম্পত্তি দাবী করে বিদ্যালয়ের জমি দখল করে নেন। এরপর থেকে সেখানে আর নতুন ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে বিদ্যালয়ের বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিলসহ কিছু আসবাবপত্র খোলা আকাশের নীচে পড়ে আছে। ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সেখানে এখন পর্যন্ত পাঠদানের জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
একই অবস্থা কেশবপুর ইউনিয়নের বাজেমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। নতুন ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে আছে দীর্ঘদিন। ফলে শিক্ষার্থীদের কোথায় পাঠদান করা হবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধুলিয়া ইউনিয়নের চরবাসুদেবপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙণের মুখে। যেকোন সময় বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে ফায়েল খায়ের ট্রাষ্টের অর্থায়নে নির্মিত অত্যাধুনিক ভবনটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ওই বিদ্যালয়টি নিলামে তোলা হবে। এরই মধ্যে বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা আসায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বাসুদেবপাশা এলাকার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অচিরেই বিদ্যালয় ভবন ভেঙে নেয়া হলেও কোথায় ক্লাস করা হবে তার কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
পূর্ব ইন্দ্রকূল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের নীচে গরু ছাগলের বিচরণ দেখা গেছে। অধিকাংশ বিদ্যালয়ের ওয়াশরুম ব্যবহার উপযোগী করা হয়নি এবং বিদ্যালয়ের আঙিনা আগাছায় ভরে গেছে।
এদিকে সম্প্রতি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো থেকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ঝড়ে পড়া ৪ হাজার শিশুর তথ্য চেয়ে একটি তালিকা দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রিয়াজুল হক বলেন, বিদ্যালয় ভবণ নির্মাণ সংক্রান্ত কিছু জটিলতা আছে। সেখানে আমরা বিকল্প শ্রেণীকক্ষ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া বাউফলের প্রতিটি বিদ্যালয় পাঠদান উপযোগী করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর ঝড়ে পড়ার তথ্য একটি এনজিও সরবরাহ করেছে, যা সত্য নয়। ইতিমধ্যে ওই তালিকা ধরে শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করার কাজ চলছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, আজকে (সোমবার) আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৯ দফার একটি নির্দেশনা পেয়েছি। আগামী ১২ তারিখের আগেই মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য উপযোগী করা হবে।
এএস/এসআর