For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

নিষিদ্ধ জালে অবাধে চলছে মাছ শিকার

Published : Sunday, 5 September, 2021 at 1:50 PM Count : 510

বরগুনাবেতাগীতে বিভিন্ন খাল, বিলে নিষিদ্ধ জালে অবাধে মাছ শিকার হচ্ছে। এতে মারা পড়ছে দেশিয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আর পোনা। 

রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিবিচিনি, বেতাগী সদর ও হোসনাবাদ ইউনিয়নের কয়েক খালে একাধিক নিষিদ্ধ বেহুন্দি আর ভাসা জাল। আর এসব খালে নির্ভয়ে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে বসে আছেন শিকারিরা। অথচ বেহুন্দি আর ভাসা দুটোই নিষিদ্ধ জাল।

উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে জানা গেছে, পৌরসভাসহ সাতটি ইউনিয়ন ও দেড় লক্ষাধিক জনসংখ্যার এ উপজেলায় ছোট, বড় ৪০টি খাল, সাতটি বিল, প্লাবনভূমি ১৪টি, ১১ হাজার ৬২৩টি পুকুর ও একটি নদী রয়েছে। এখান থেকে বছরে তিন হাজার ৬০ মে. টন মাছ উৎপাদন হচ্ছে। জনপ্রতি দৈনিক মাছের চাহিদা ৬৫ গ্রাম সে হিসেবে এ উপজেলায় মোট জনসংখ্যার বাৎসরিক মাছের চাহিদা দুই হাজার ৮০০ মে. টন। চাহিদা মিটিয়ে বছরে উদ্বৃত্ত থাকে ২৬০ মে. টন।

বিবিচিনি ইউনিয়নের কারিকরপাড়া খাল, গড়িয়াবুনিয়া, নাপিতখালী, সিদ্ধান্ত, সদর ইউনিয়নের কবিরাজের খাল, বাসন্ডা, বেড়েরধন, লক্ষ্মীপুরা, হোসনাবাদের উত্তর কাটাখালী, ধনমানিক চত্রা, জলিসা খালসহ উপজেলাজুড়ে বিভিন্ন খাল আর বিলে তিন শতাধিক নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে স্থানীয় জেলেরা এভাবে মাছ শিকার করছেন।
শিকারিদের পাতা নিষিদ্ধ জালে আটকা পড়ে বিলুপ্তি পথে চিংড়ি, কালিবাউশ, বাইলা, গুইল্লা, পুঁটি গুইল্লা, ইছা, বোয়াল, পাবদা, পুঁটি, শোল, টাকি, মাছ। এছাড়া এসব খালের বিভিন্ন অংশে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে গতিরোধ করা হচ্ছে পানি প্রবাহের। এতে যেমন মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে তেমনই ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।

তবে স্থানীয়রা জানান, এসব দেখার বিষয়ে টনক নড়ছে না মৎস্য কর্মকর্তার। 

বেহুন্দি জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন স্থানীয় এক যুবক। তিনি বলেন, 'সবাই ধরে কেউ কিছু বলে না। তাই আমিও ধরি। এই এলাকায় বেশির ভাগ ভাসা জাল, কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জাল দিয়েই মাছ ধরে। এসব জালে প্রায় সব ধরনের মাছ আটকা পড়ে।'

স্থানীয়রা বলছেন, আগে এক সময় এসব খালে বড় বড় বোয়াল, শোল, টাকি, চিংড়ি, বাইম মাছ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশিয় মাছ ধরা পড়তো। এখন এসব মাছ তেমন ধরা পড়ে না। বাজারে খাচি ভরে এসব ছোট ছোট সাইজের দেশিয় মাছ বিক্রি হয়। দু'বছর আগেও, মাঝে মধ্যে প্রশাসনের লোকজন এসে খাল, বিল থেকে এসব অবৈধ জাল তুলে নিয়ে পুড়ে ফেলত। কিন্তু এখন আর এসব অবৈধ জাল কেউ নিষেধও করছে না।

জানা গেছে, স্থানীয় বাজারেই নিষিদ্ধ জাল বিক্রি হচ্ছে। 

পৌর শহরের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, নিষিদ্ধ জাল পাতা বন্ধ করতে হলে দোকানগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জেলেরা যাতে অবৈধ ভাবে দেশিয় মাছ না ধরে সে বিষয়ে তদারকি জোরদার করতে হবে।

বিবিচিনি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাড়ির বুলু সিকদার বলেন, যেভাবে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে দেশিয় প্রজাতি মাছ ধরছে অথচ এ ব্যাপারে মৎস্য কর্মকর্তার ভূমিকা রহস্যজনক। 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, কারেন্ট জাল, বেহুন্দি, ভাসা সবই নিষিদ্ধ। আমরা বেশ কিছু স্থান চিহ্নিত করেছি। প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা দ্রুত সেসব স্থানে অভিযান পরিচালনা করে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, খাল, বিল ও মুক্ত জলাশয়ে বেহুন্দি জাল, ডুব জাল, টানা জাল, চর জাল, পেকুয়া জাল বসিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। কেউ এর ব্যত্যয় ঘটালে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৎস্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত আমরা এসব নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো।

-এসকে/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,