For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

২০০ কোটি টাকার অর্ডার নিয়ে এবার উধাও ‘ই-অরেঞ্জ’

Published : Tuesday, 17 August, 2021 at 12:15 PM Count : 593

দেশে ই-কমার্স প্রতারণার নতুন নাম ই-অরেঞ্জ ডটকম। গ্রাহকদের দাবি, প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২০০ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার নিয়ে ডেলিভারি দিচ্ছে না। অর্ডার নিয়ে পণ্য না দেওয়ার টালবাহানার মধ্যেই মালিকানা পরিবর্তন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন মালিকও লাপাত্তা।

ই-অরেঞ্জের গুলশান কার্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্ধ কার্যালয়ের সামনে প্রায় প্রতিদিনই জড়ো হচ্ছেন এর গ্রাহকরা। ক্রেতাদের বড় অংশই ই-অরেঞ্জের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর সাবেক ক্রিকেটার ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজাকে দুষছেন। তাঁরা দাবি করছেন, মাশরাফির বিজ্ঞাপন দেখেই তাঁরা এই অনলাইন শপের ওপর আস্থা রেখে পণ্যের অর্ডার দিয়েছিলেন।

ভুক্তভোগীদের দাবি, মাশরাফির কথা শুনে প্রতিষ্ঠানটি থেকে পণ্য কেনার জন্য টাকা দিয়েছেন তারা। কিন্তু এখন ই-অরেঞ্জ তাদের পণ্য ডেলিভারি অথবা অর্থ ফেরত দিচ্ছে না।

সোমবার গুলশান-১ এর ১৩৭ নম্বর রোডে অবস্থিত ই-অরেঞ্জের কার্যালয় থেকে মিরপুর-১২ এর বি-ব্লকে অবস্থিত মাশরাফি বিন মর্তুজার বাসার সামনে আলোচনার জন্য দুই শতাধিক ভুক্তভোগী উপস্থিত হয়েছেন।
যদিও ই-অরেঞ্জ সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের অফিসিয়াল পেজে এক পোস্টে জানিয়েছে, মাশরাফির সঙ্গে এখন আর সম্পর্ক নেই তাদের।

ই-অরেঞ্জে গত ২০ মে ছয়টি মোটরবাইক অর্ডার করেছিলেন মোহাম্মদ রাব্বিল হাসান। ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তা ডেলিভারি দেওয়ার কথা থাকলেও পাননি। এখন হন্যে হয়ে প্রতিষ্ঠানটির দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। 

সোমবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি সরকারের ই-কমার্স নীতিমালা প্রকাশের আগে ই-অরেঞ্জের ডাবল টাকা ভাউচার কিনেছিলাম। কিন্তু ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ডেলিভারি বন্ধ রেখেছে। গত ১৮ জুলাই ই-অরেঞ্জ একটি ডেলিভারি তারিখ প্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে লকডাউনের দোহাই দিয়ে ডেলিভারি বন্ধ করে দেয় এবং জানায় যে লকডাউন শেষ হলে ডেলিভারি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। 

লকডাউন শেষ হওয়ার আগের দিন ১০ আগস্ট তারা আবার নতুন করে ১৬ আগস্ট ডেলিভারি লিস্ট দেবে বলে জানায়। কিন্তু পরে ই-অরেঞ্জ তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে জানায়, তাদের আগের বাইক সেলারের সঙ্গে তারা চুক্তি বাতিল করেছে। তাই নতুন সেলার পেতে বা নিজেরা বাইক ইমপোর্ট করতে ৪৫-৬০ কর্মদিবস লাগবে। তাই যারা বাইক নিতে চায় তাদের অপেক্ষা করতে হবে, অথবা রিফান্ড রিকোয়েস্ট করতে হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু গ্রাহক রিফান্ড চেয়ে ফোন করায় তারা বলে, ২১ কর্মদিবস লাগবে রিফান্ড পেতে। তখন সরকার নির্ধারিত ১০ দিনের কথা বলায় তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি।’

ই-অরেঞ্জের আরেক গ্রাহক হাবিবুর রহমান জানান, তিনিও সাতটি বাইক অর্ডার করেছেন। গত জুলাই মাসে অর্ডার ডেলিভারি দেওয়ার কথা থাকলেও তারা তা করেনি। এখন তাদের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর পাচ্ছেন না। তাদের কার্যক্রম দেখে বুঝতে পারছেন না কার কাছে যাবেন। 

জানা যায়, ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত অরেঞ্জ বাংলাদেশ লিমিটেডের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ অনলাইন শপ। এটি ২০১৮ সাল থেকে ঢাকা শহরে অনলাইনে পণ্য দিচ্ছে। লকডাউনে তেমন কার্যক্রম না থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজে একটি পোস্টের মাধ্যমে অফিস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। 

সূত্র জানায়, গত ১১ জুলাই ই-অরেঞ্জের মালিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমান মালিক বিথী আক্তার। কিন্তু বর্তমান বা সাবেক মালিক সোনিয়া মেহজাবিন—কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সোমবার অফিসের হটলাইন নম্বর এবং সোনিয়া মেহজাবিনের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

এদিকে, সোমবার ই-অরেঞ্জের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৫০ জন গ্রাহক বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এরপর গুলশান-২ গোলচক্করে অবস্থান  নেন শতাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক।

গুলশান থানার উপপরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কিত, এ জন্যই আমরা ক্রেতাদের ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের কাছে যাওয়ার কথা বলেছি। এর সমাধান তারাই দিতে পারবে।’

-এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,