পানির সংকটে পাট জাঁগ দিতে পারছেন না কৃষক
Published : Tuesday, 13 July, 2021 at 11:23 AM Count : 98
চলতি বছর পাটের আবাদ বৃদ্ধি ও বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি ফুটলেও পানির অভাবে পাট জাঁগ (পঁচানো) দেয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চাষিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দু’সপ্তাহ আগে কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদ-নদীসহ বিভিন্ন ঝলাশয়ে পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা তাদের সোনানী আঁশ পাট কাটা শুরু করেছেন। এরই মধ্যে অনেক চাষি পাট জাঁগ (পঁচানো) দেয়াও শুরু করেছেন। ধরলা নদী, নীলকমল নদী ও বারোমাসিয়া নদীসহ বিভিন্ন খাল-বিলের নিকটবর্তী কৃষকরা পাট-জাঁগ দিচ্ছেন।
যেসব এলাকায় বড় বড় খাল-বিলসহ বিভিন্ন ডোবা ও নালার পানি শুকিয়ে গেছে ওইসব এলাকার কৃষকরা পাট কাঁটতে পারছেন না। অনেকেই আবার ডোবা-নালায় পানি দেখে পাট কাটা শুরু করলেও দুই সপ্তাহ ধরে বৃষ্টির দেখা না পেয়ে পানির অভাবে পাট জাঁগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অনেক কৃষক পাট কেটে জমির মধ্যেই রেখে দিয়েছেন। আবার অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও মোটরের পানি দিয়ে পাট জাঁগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ করছেন।
উপজেলার কুরুষাফেরুষা গ্রামের কৃষক রনজিৎ কুমার রায় ও পুল্ল চন্দ্র রায় জানান, তারা দুজনেই দুই বিঘা করে জমিতে পাট চাষ করেছেন। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর পাটের বাম্পার ফলনও হয়েছে। কিন্তু গত ১৫ দিন আগে বৃষ্টির পানিতে ডোবা-নালা ভরাট হলেও তা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে আমরা শ্যালো মেশিনের পানিতে পাট জাঁগ দিয়েছি। সাত থেকে আট দিন ধরে প্রতিদিন দেড় কেজি তেলের পানি দিতে হচ্ছে। পাট পঁচাতে সময় লাগে ২০ থেকে ২৫ দিন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। পাটের বীজ বপণের সময় আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও পরবর্তীতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আগাছা কম হয়েছে। এ বছর উপজেলায় ৭৪৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে এর চেয়েও বেশি অর্থাৎ এক হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন প্রান্তিক কৃষকরা। ইতি মধ্যে সাড়ে তিনশ হেক্টর জমির পাট কৃষকরা কর্তন করেছেন। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা শ্যালো ও মোটর দিয়ে পাট জাঁগ দিচ্ছেন। আগামী শুক্র ও শনিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে পানির সংকট কেটে গেলে আমাগী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সকল পাট কর্তন ও জাঁগ দিতে পারবেন কৃষকরা। আশা করছি কৃষকরা তাদের উৎপাদিত স্বপ্নের সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
-এসি/এমএ