বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত কারখানার অপারেটর মোরসালিন হক (২৪) প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে কারখানার তৃতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন বলে জানা গেছে।
তিনি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার উত্তর সুবেদপুর গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে।
এ নিয়ে এ ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হলো।
এদিকে, কারখানার আগুন ১৮ ঘন্টায়ও (শুক্রবার দুপুর ১টা পর্যন্ত) নেভানো যায়নি। তিন জনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া গেলেও ২৫ জনের নিখোঁজ সংবাদ থানায় জিডি করেছেন স্বজনরা।
দমকল বাহিনীর ১৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে অবিরাম কাজ করছে। ভবনের বাইরে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে নিখোঁজ সহকর্মীদের খোঁজ পেতে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, মোরসালিনকে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক মোরসালিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে এ ঘটনায় সিলেটের যতি সরকারের স্ত্রী স্বপ্না রানী (৪৫) ও উপজেলার গোলাকান্দাইল নতুনবাজার এলাকার হারুন মিয়ার স্ত্রী মিনা আক্তার (৩৩) নামে দুই নারী নিহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ছয় জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ডেমড়া, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে।
সে সময় রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এস এম সাহেদ সে সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দু'জনের মৃত্যুর তথ্য জানান।
শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সেজান জুস কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কর্মচারী কাজ করেন। সাত তলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচতলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত। এ সময় আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় কালো ধোঁয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। একপর্যায়ে শ্রমিকরা ছোটাছুটি শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। আবার কেউ ছাদ থেকে লাফ দেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই রানী ও মিনা আক্তার নামের দুই নারী নিহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহত স্বপ্না রানীর মেয়ে শ্রমিক বিশা রানী বলেন, অনেক শ্রমিক কারখানা ভবনের ভেতরে আটকে রয়েছেন। তাদের বের করা না হলে সবাই মারা যাবেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল আল আরিফিন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আটকেপড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
-এমএ