For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু, অস্বীকার করছে কর্তৃপক্ষ

Published : Friday, 2 July, 2021 at 11:13 PM Count : 519

দেশের কয়েকটি জেলায় অক্সিজেনের অভাবে কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে যে অভিযোগ এসেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং মাঠ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করছে।

কয়েকটি জেলায়, বিশেষ করে সাতক্ষীরা, খুলনা এবং বগুড়ায় করোনাভাইরাসের রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েও অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন রোগীর আত্মীয়-স্বজন।

‘আমার সামনে ১০মিনিটের মধ্যে তিনজন মারা যায়, আমার শাশুড়ির অবস্থা এর মধ্যে খারাপ হয়ে যায়,’ বলেন সাতক্ষীরার শাহজাহান আলী।

কিন্তু দেশের কোথাও অক্সিজেনের ঘাটতি থাকতে পারে বলে মনে করেন না স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
‘আমাদের কোন রোগী এখন পর্যন্ত অক্সিজেন ছাড়া ছিল না এবং এখনো থাকবে না,’ বিবিসিকে বলেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র সুহাস চন্দ্র হালদার।

সাতক্ষীরায় তদন্ত কমিটি
দক্ষিণ পশ্চিমের জেলা সাতক্ষীরায় অক্সিজেনের অভাবে যে কয়জন মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে নাজমা খাতুন একজন।

শুধুমাত্র কোভিড চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর তিনি মারা যান।

তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় শাহজাহান আলী সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন।

তিনি বলছিলেন তার শাশুড়ি ভর্তি ছিল হাসপাতালে, যার দেখাশোনা তিনি করছিলেন।

হঠাৎ ফোন পেলেন যে, হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে লোক মারা যাচ্ছে।

‘আমি দ্রুত চলে যাই হাসপাতালে। যেয়ে দেখি অক্সিজেনের ফ্লো কমে একদম নেমে গেছে’, তিনি বলেন।

‘আমার সামনে ১০মিনিটের মধ্যে তিনজন মারা যায়। এর এক ঘণ্টা পরে অক্সিজেনের একটা ট্রাক আসে।

‘আমার শাশুড়ির অবস্থা এর মধ্যে খারাপ হয়ে যায়। পরে যখন তাকে আবার অক্সিজেন দেয়া হয় ততক্ষণে তিনি মারা যান,’ মিঃ আলী বলেন।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসেইন সাফায়াত বলছেন,এই ঘটনায় দুইটা তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। একটা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপরটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষে।

খুলনা শহরে কী অবস্থা?
এদিকে বাংলাদেশের এখন মৃত্যুর সংখ্যা যে শহরে সবচেয়ে বেশি সেই খুলনার কোভিড চিকিৎসায় নির্ধারিত হাসপাতালেও এখন অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে বলে রোগীর পরিবার অভিযোগ করছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাবাকে করোনার চিকিৎসা করাচ্ছেন মোহাম্মদ শহীদুল।

তিনি বলেন গতকাল অক্সিজেনের অভাব প্রকট আকার ধারণ করায় তার বাবার বেঁচে থাকা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়।

‘গতকাল আমি ৮০% আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম আমার আব্বা হয়ত বাঁচবে না’, তিনি বলেন।

তিনি একটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছ থেকে একটা সিলিন্ডার সংগ্রহ করেন।

‘হাসপাতালের সিলিন্ডার আসলো দুপুর দুইটাই। সারাদিন একটা সংকট লেগেই আছে,’ তিনি বলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী বলছে?
হাসপাতালটির মুখপাত্র সুহাস চন্দ্র হালদার বলেন খুলনার কোভিড চিকিৎসার নির্ধারিত এই হাসপাতালে কোন প্রকার অক্সিজেনের স্বল্পতা নেই।

‘আমাদের কোন রোগি এখন পর্যন্ত অক্সিজেন ছাড়া ছিল না এবং এখনো থাকবে না। আমাদের সেই পরিমাণ অক্সিজেন মজুদ আছে,’ তিনি বলেন।

মিঃ হালদার বলেন হাসপাতালে ১৩০আসনের বিপরীতে ২০৪জন রোগী আছে, যাদের অনেককে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

‘যদি কোন রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হয় তাহলে একটা সিলিন্ডার খুলে আরেকটা সেট করতে দুই/তিন মিনিট লাগতে পারে। এছাড়া আমাদের কখনোই অক্সিজেন ঘাটতি হয় না,’ তিনি বলেন।

বগুড়ায় বড় সঙ্কটের আভাস
এদিকে বগুড়াতে কোভিড চিকিৎসার নির্ধারিত মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে শুক্রবার সকালে একজন অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন বলে মৃত একজনের ছেলে অভিযোগ করেছেন।

মোস্তাক আলী নামে ঐ ব্যক্তি অভিযোগ করছেন তারা বাবা শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে মারা যান চরম শ্বাসকষ্ট এবং অক্সিজেনের অভাবে। কিন্তু হাসপাতালের পরিচালক অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, অক্সিজেনের অভাবে কেউ মারা যায়নি।

‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে গত ২৪ঘন্টায় ৫জন মারা গেছে,’ হাসপাতালের পরিচালক এটিএম নুরুজ্জামান বিবিসিকে বলেন।

তিনি বলেনই তথ্য তারা স্বাস্থ্য অধিদফতরকেও জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন মুখপাত্র রোবেদ আমিন বলছেন দেশে এখন যে পরিমাণ অক্সিজেন উৎপাদন করা হচ্ছে সে অনুপাতে চাহিদা এখনো তৈরি হয়নি।

‘সে হিসেবে বলা যাবে না যে দেশে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে,’ তিনি বলেন।

‘প্রতিদিন ১৯০টন তৈরি হচ্ছে অক্সিজেন। কিন্তু চাহিদা তো ১৯০টন না। আর সব রোগীর যে অক্সিজেন লাগবে সেটাও না,’ আমিন বলেন।

তিনি বলেনএকটা হাসপাতালে কয়টা সিলিন্ডার এবং কয়টা সেন্ট্রাল লাইন আছে সেটা হিসেব করে যদি একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে দেয়া হয় সেটা ভুল হবে।

এদিকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের চুয়াডাঙ্গা , যশোর, ঝিনাইদহ জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তবে সেখানে অক্সিজেন স্বল্পতার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

-এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,