অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মা-মেয়েকে পিটিয়ে জখম
Published : Friday, 2 July, 2021 at 11:23 AM Count : 175
কক্সবাজারের পেকুয়ায় অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছেনুয়ারা বেগম (৩৫) নামের এক পোশাক কর্মী ও তার বৃদ্ধা মা মাহমুদা খাতুনকে (৫৫) পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা আলেকদিয়াকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত মাহমুদা খাতুন ওই গ্রামের মৃত. আবুল কাসেমের স্ত্রী। ছেনুয়ারা বেগম রাজশাহীর জয়পুরহাট এলাকার মুন্না হোসেনের স্ত্রী।
ছেনুয়ারা বেগম বলেন, চট্টগ্রাম শহরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করি। স্বামী অটোরিকশাচালক। কয়েক মাস আগে বাবার বাড়িতে থাকতাম। এখন দুই সন্তান ও স্বামী নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করি। গত সোমবার স্বামী-সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসি। গত ছয় মাস ধরে প্রতিবেশি ফজল করিম আমাকে মুঠোফোনে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। প্রায় সময় আমাকে ফোন করে বিরক্ত করে। বিষয়টি সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছি। সামাজিক বৈঠকে তারা ফজল করিমকে সতর্ক করেন। ফজল করিম বৈঠকে কোন সময় কোন ধরনের বিরক্ত করবে না বলে মৌখিক মুচলেকাও দিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত এক মাস ধরে আবারো অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে মোবাইলে কল করে বার বার বিরক্ত করছে। অতিষ্ঠ হয়ে তার নাম্বারটি ব্লাক লিষ্টে দিয়েছি। পরে তিনি শওকত নামের তার এক বন্ধুর মোবাইল থেকে ফোন করে কু-প্রস্তাব দেয়। ফজল করিমের মুঠোফোনের কথা আমার কাছে রেকর্ড আছে।
তিনি আরও বলেন, বাবার বাড়িতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে গত মঙ্গলবার আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করে। অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় সড়কের উপর আমাকে দেখে মারধর শুরু করে ফজল করিম ও তার বন্ধু শওকত। এ সময় আমার মা উদ্ধারে এগিয়ে আসলে তাকেও পিটিয়ে রাস্তার উপর ফেলে রেখে।
স্থানীয় শালিসকার মোজাম্মেল হক, মনির উদ্দিন মনু, মোকতার আহমদ বলেন, বৈঠকে আমরা ফজল করিমকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম। মৌখিক ভাবে সে আর বিরক্ত করবে না বলে অঙ্গিকার করে। কিন্তু সে কথা রাখেনি। তারা মা-মেয়েকে পিটিয়ে তারা রাস্তায় ফেলে রাখে। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়।
এ ব্যাপারে জানতে ফজল করিমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে ফজল করিমের স্ত্রী দিলুয়ারা বেগম বলেন, ছেনুয়ারা বেগম আমার সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আমার স্বামীকে ভাগিয়ে নিতে চায়। আগে ওই মহিলার সঙ্গে আমার স্বামীর পরকিয়া সম্পর্ক ছিল। তবে এখন নেই। ব্ল্যাকমেইল করে আমার স্বামীকে ফাঁসাতে চায় সে। ওই মেয়ের সঙ্গে অনেকের সম্পর্ক রয়েছে। মারধর করা হয়নি। সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে।
অভিযুক্ত শওকত হোসেন বলেন, মংসাইকেল নিয়ে ফজল করিমের সঙ্গে তার বাড়িতে যাচ্ছিলাম। বাড়ির সামনে পৌঁছলে ছেনুয়ারা বেগম গাড়ি থামিয়ে আমাকে জুতাপেটা করে। তার সঙ্গে আমার আগে পরিচয় নেই। মানুষের মুখে একটু একটু শুনেছি ফজল করিমের সঙ্গে ওই মহিলার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। আমি ফজল করিমকে ভাই ডেকেছি। সে সুবাদে তার বাড়িতে মাঝে মধ্যে বেড়াতে আসি। আমি চট্টগ্রাম শহরে একটি প্রেসে চাকরি করি।
পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-এনইউ/এমএ