স্থলভাগে এসেও তাণ্ডব চালাচ্ছে ইয়াস

স্থলভাগে আঘাত করার পরও দাপট কমেনি ইয়াসের। ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে আছড়ে পড়লেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সেটি অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই দাপট চালিয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ রিপোর্ট হচ্ছে, স্থলভাগ অতিক্রমের পর আরও ৯ ঘণ্টা তাণ্ডব চালাবে ইয়াস। জেলায় জেলায় চলবে ঝোড়ো হাওয়া।

বুধবার দুপুরে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় কর্মকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ঝড়টা এখন উত্তর ও উত্তর-পূর্বের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অর্থাৎ ল্যান্ডফলের পর থেকে ঝাড়খণ্ডের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ইয়াস।' তিনি আরও জানান, 'এখনও ঝড়টি রয়েছে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে। আগামী তিন ঘণ্টায় সেটি পরিণত হবে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে। পরের ছয় ঘণ্টায় সেটি দুর্বল হয়ে পরিণত হবে সাইক্লোনে। ' অর্থাৎ আগামী নয় ঘণ্টা পর্যন্ত দাপট দেখাবে এই ঝড়।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতর সূত্র আরও জানায়, বালাসোর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে ইয়াস। সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে ঝড়ের তাণ্ডব। ল্যান্ডফলের সময় গতিবেগ ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। ঝোড়ো হাওয়ার দাপট ছিল ১৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।

এদিকে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় সব নদ-নদীতে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে ও বাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। জোয়ারের পানিতে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ি, ঘোড়ামরা, সৈয়দপুর ইউনিয়নের উত্তর বগাচতর গ্রাম ও কুমিরা ইউনিয়নের একটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

বাগেহাটের মোংলার প্রায় সাড়ে ৮শ’ পরিবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। মোংলার কাইনমারী স্লুইস গেট উপচে পানি পৌর শহরে প্রবেশ করছে। পৌরসভার মধ্যে পানি ঢুকছে মাছমারা এলাকার রাস্তা ছাপিয়ে। জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকা পাঁচ-ছয় ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝড়ে ভেঙে গেছে বন বিভাগের দুবলা জেলেপল্লী টহল ফাঁড়ির কাঁচাঘরও।

দুবলা জেলেপল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় জানান, দুবলার সুন্দরবনের ভেতরে পানি বাড়ায় প্রায় ৬শ’ থেকে ৭শ’ হরিণ দুবলা মিষ্টি পুকুর পাড়ে আশ্রয় নিয়েছে।