মাটি ও বাতাস এবং এমনকি সুস্থ মানুষের নাকে বা কফেও এটা পাওয়া যায়। কিন্তু ব্ল্যাক ফাংগাস ছোঁয়াচে নয়। অর্থাৎ এক জনের থেকে অন্য জনের শরীরে সংক্রমিত হয় না।
সাধারণত আর্দ্র স্থানে এটি হয়। ভারতের মতো আর্দ্র দেশে এটি অনেক স্থানেই থাকে। সাধারণত শ্বাসের সময়ে বা শরীরে কাটা অংশের মাধ্যমে এটি দেহে প্রবেশ করে। কিন্তু সাধারণত আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ শক্তি এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গুরুতর করোনা আক্রান্তদের সুশ্রষার জন্য স্টেরয়েড প্রয়োগ করা হচ্ছে। সেই স্টেরয়েড রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে। কিছু ওষুধ রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরেও প্রভাব ফেলে। আর ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি পাওয়া সুগার লেভেল হতে পারে মারাত্মক।
ভারতীয় চিকিত্সক অম্বরীশ মিথলের কথায়, 'একদিকে রক্তে উচ্চ শর্করা। অন্যদিকে অক্সিজেনের মাত্রা কম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস। ফলে, সবমিলিয়ে এটি ব্ল্যাক ফাংগাস সংক্রমণের সবকটি শর্তই পূরণ করে।' সিংহ ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে মূলত ডায়াবেটিসের রোগী যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদেরই ব্ল্যাক ফাংগাসের সংক্রমণ হয়েছে।'
লক্ষণ
জ্বর, মাথা ব্যথা, কাশি, নিঃশ্বাসের সমস্যা, রক্তবমি, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন, নাক বন্ধ হয়ে আসা, নাক থেকে চাপা রক্তের মতো বা কালো পুঁজ বেরনো, চোয়ালে ব্যথা, মুখের এক দিকে ব্যথা, অবস হয়ে যাওয়া বা ফুলে যাওয়া, নাকের উপর কালচে দাগ, দাঁতে ব্যথা বা দাঁত আলগা হয়ে আসা, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, বা দু’টো করে জিনিস দেখা, ত্বকের সমস্যা, বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাসের সমস্য বেড়ে যাওয়া।
কাদের এই ছত্রাক ইনফেকশনের ঝুঁকি বেশি?
যাঁদের করোনা চিকিৎসায় স্টেরয়েড দেওয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে এই ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস যাদের তাঁদেরও সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। বহুদিন ধরে যাঁরা আইসিইউ-তে থেকেছেন বা কো-মর্বিডিটি রয়েছে তাঁদের এই ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
আক্রান্ত হলে কী কী করবেন এবং কী কী করবেন না?
১. বিশেষজ্ঞরা ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলছেন।
২. কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন এমন রোগীর ডায়বেটিস নির্দিষ্ট সময় অন্তর দেখতে হবে।
৩. ঠিক পরিমাণ এবং অন্যান্য বিষয় করে রোগীকে স্টেরয়েড দেওয়া।
৪. অক্সিজেন থেরাপির সময়ে পরিস্কার পানি ব্যবহার করা।
৫. চিকিৎসকের পরামর্শে রোগীকে অ্যান্টিফাংগাল বা অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে।
৬. উপসর্গ দেখলেই সাবধান হতে হবে। সদ্য করোনামুক্ত? আগে টুথব্রাশ বদল করুন! এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা
কী কী সাবধানতা বজায় রাখবেন?
১. ধুলোবালি রয়েছে এমন জায়গায় গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
২. বাগানের কাজ করার সময় লম্বা ট্রাউজার, ফুল হাতা জামা, গ্লাভস ও জুতো পরুন।
৩. পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন।
সূত্র, হিন্দুস্তান টাইমস, এই সময়।
-এমএ