কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরীতে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন জেন্ডার প্রমোটার, আবৃত্তি ও সঙ্গীত শিক্ষকরা।
জানা গেছে, কিশোর-কিশোরীদের মানসিক বিকাশ, জেন্ডার সচেতনতা সৃষ্টি, গান ও আবৃত্তি প্রশিক্ষণে ২০১৯ সালের নভেম্বরে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় একটি করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন করা হয়। এগুলো ইউনিয়নের একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচন করে সেখানে তাদের কার্যক্রম চালায়। সপ্তাহে একদিন করে প্রতিটি ক্লাবে প্রশিক্ষণ নেয় তালিকাভূক্ত ৩৫ জন কিশোর-কিশোরী। তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে উপজেলায় ৩ জন জেন্ডার প্রমোটার, প্রতিটি ক্লাবের জন্য ১ জন আবৃত্তি ও ১জন সঙ্গীত শিক্ষক। এদের মধ্যে প্রত্যেক জেন্ডার প্রমোটার দুই ক্লাসের বিপরীতে ২ হাজার, আবৃত্তি ও সঙ্গীত প্রশিক্ষকরা প্রতি সপ্তাহের ক্লাসের জন্য ৫০০ টাকা সম্মানী পাওয়ার কথা। কিন্তু তারা তাদের সে সম্মানী নিয়মিত পান না।
অভিযোগ উঠেছে বরাদ্দ আসলেও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জিন্নাত আরা ইয়াসমিন প্রশিক্ষকদের নিয়মিত সম্মানী না দিয়ে উত্তোলন করে তা নিজের কাছে রেখেছেন। শুধু তাই নয়, প্রশিক্ষাণার্থীদের জন প্রতি ৩০ টাকা করে নাস্তার বরাদ্দ দেয়া থাকলেও তাদেরকে জন প্রতি ১০ টাকার উপরে নাস্তা দেয়া হয় না। অপরদিকে ২০২০ -২১ অর্থ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিটি ক্লাবের জন্য একটি প্লাষ্টিক ম্যাট, একটি হোয়াইট বোর্ড, ২টি চেয়ার, একটি সাইনবোর্ড, একটি ফাইল কেবিনেট ক্রয়ের জন্য ২১ হাজার করে ১৫টি ক্লাবে মোট ৩ লাখ ১৫হাজার টাকা বরাদ্দ আসলেও এর কোন কিছুই ক্রয় করা হয়নি।
সঙ্গীত শিক্ষক আবু হানিফ, শফিকুল ইসলাম শফি, পুর্ন চন্দ্র কর্মকার, স্মৃতি সেন, আব্দুল বারেক, মীরা সাহা, আবৃত্তি শিক্ষক হাফিজুর রহমান হৃদয়, নাজমুল হক, সৌমি জানান, তাদের ক্লাবে কোন সাইনর্বোড বা আসবাবপত্র নেই। তারা নিয়মিত পান না তাদের প্রাপ্য সম্মানী।
এছাড়া তারা শুনেছেন প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর নাস্তা বাবদ বরাদ্দ দেয়া আছে ৩০ টাকা। কিন্তু মহিলা বিষয়ক অফিস থেকে তাদের জনপ্রতি দেয়া হয় ১টি কলার সাথে ১টি ৫ টাকা দামের বিস্কুটের প্যাকেট অথবা ৫ টাকা দামের ১টি পাউরুটি। বাকি টাকার কোন হদিস নেই।
জেন্ডার প্রমোটার আবু আতা আব্দুল্লাহ ডিফেন্স, মমতাজ বেগম এবং সানোয়ারা পারভীন বলেন, ফেব্রয়ারী ও মার্চ মাসের সম্মানী ভাতার টাকা বরাদ্দ আসলেও এখন পর্যন্ত তাদের দেয়া হয়নি।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জিন্নাত আরা ইয়াসমিন মুঠোফোনে ফোনে জানান, আসবাবপত্র নাই, নাস্তা কম কিংবা সম্মানী ভাতা দেয়া হয়নি, এসব নিয়ে অনেক কিছু ঘটেছে বা এর মধ্যে অনেক বিষয় আছে। এসব কথা এখন বলা যাবে না। আপনি অফিসে আসেন বসে কথা বলবো।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম জানান, কিশোর-কিশোরী ক্লাবের বরাদ্দের হিসাব নিকাশ মহিলা বিষয়ক অফিস ভালো বলতে পারবে। আমার এখানে কোন হিসাব বা বরাদ্দের কপি আসে না। আর সম্মানী ভাতা নিয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দাবি আইবিয়াসের সমস্যার কারণে টাকা আসে নাই। বিষয়টি এ পর্যন্তই আছে।
কেএস/এনএন