For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

স্বস্তির জীবনও সংকটে ঘেরা

Published : Friday, 21 August, 2020 at 3:02 PM Count : 279

এক সময় সবই ছিল। হারিয়ে গেছে সর্বস্ব। ছিল না কিছুই অবশিষ্ট, এমনকি থাকার স্থানটিও। এবার হয়েছে ঠিকানা নিজের একটি ঘর, নিশ্চিন্তে বসবাসের পরিবেশ আর সেই ঘরের জানালা দিয়ে এসে পড়েছে আলো।

ঘরের সামনে বারান্দা, এক চিলতে উঠোন এই নিয়ে ঢালচর কুকরী মুকরী নদীর ভাঙ্গণ কবলিত এলাকার মানুষের স্বস্তির জীবন। অথচ এক সময় তাদের নিজস্ব ঘর ছিলনা। নদী ভাঙ্গণের পর থাকতেন রাস্তার পাশে, অন্যের বাড়িতে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙ্গণসহ নানামুখী বিপদ উপকূলীয় মানুষদের জীবনে দেখা দেয়।

প্রতি বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ তাদেরকে করেছে নিঃস্ব। প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিপন্ন এসব নিঃস্ব পরিবারের পুনর্বাসনে প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন বিশেষ উদ্যোগ “আশ্রয়ন প্রকল্প”। 

সুমী বেগম (৩৫) চর কুকরী মুকরী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। তিনি বলেন, নদী ভাঙ্গণের পর আমাদের থাকার কোন জায়গা ছিল না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দয়ায় আমরা একটি ঘর পেয়েছি। আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় অন্তত ৩ শতাধিক আবাসন রয়েছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণের দ্বীপ চর কুকরী মুকরীতে। কুকরী মুকরীর বনের ধারে সাড়ি সাড়ি আবাসনের টিনের ঘর। ঘরের সামনে খোলা জায়গায় রয়েছে বিশাল দিঘী। মানুষগুলোর মাথাগোঁজার ঠাঁই। নদী ভাঙ্গণের পর এই মানুষগুলো বসবাস করতো অত্যন্ত মানবেতর ভাবে। মাথার ওপরে চাল পর্যন্ত ছিল না। ছিল না বসবাসের পরিবেশ। অভাবে পড়া সেই নিঃস্ব মানুষদের জন্য এখন হয়েছে এক টুকরো মাথাগোঁজার ঠাঁই।

বাঁধের পাশে বা অন্যের বাড়িতে এখন আর থাকতে হয় না তাদের।  আবাসনের সামনের খোলা জায়গায় শিশুরা মেতে উঠছে দুরন্তপনায়। বাড়ির বড়রা কেউ বুনছে সবজি, নিজের মতো সাজ্জাছে বাড়িঘর। বাড়ির আঙ্গিণায় লাগানো সবজি রান্না হয় আবাসনের ঘরে ঘরে। হাট-বাজার না হলেও দুই বেলা খাওয়া চলে নিজেদের লাগানো সবজি দিয়ে।

দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, আবাসনের ঘরগুলোতে রান্নার আয়োজন। টিনের ঘরের চালের পাশ দিয়ে উড়ে যায় ধোঁয়া। শিশুরা খেলে ঘাস বনে।

আবাসনের পরিবারগুলো জানায়, মাথাগোজার ঠাই হলেও এখানে রয়েছে অনেক সংকট। এর মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার সংকটই বড়। শিশুদের স্কুলে যাওয়ার জন্য নেই রাস্তা। তাই শিশুরা বই মাথায় নিয়ে খাল সাঁতরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে।

এক দুপুরে আবাসনের এই শিশুদের সঙ্গে দেখা হয়। ওরা অনেক দূর ঘুরে খাল পেরিয়ে স্কুল যায়, আর ফিরতি পথে বই মাথায় নিয়ে খাল পার হয় সাঁতরে। শিশুরা আবাসনের কাছাকাছি একটি স্কুল চায়। এখন করোনা তাই তারা স্কুলে যায় না।

এতো সব সমস্যার মধ্যেও আবাসনের মানুষগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাণের ছোঁয়া। সব কাজ শেষে দুপুরের খাওয়া দাওয়ার অপেক্ষা।

নদী ভাঙ্গণ কবলিত এসব মানুষের আবাসনে ঠাঁই হলেও এখনে সমস্যার অন্ত নেই। শিশুরা পায়নি লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ। আধুনিক এই যুগে অভিভাবকদের একটি অংশ শিশুদের লেখাপড়া করানোর জন্য উদ্যোগী হলেও সব কিছু গুছিয়ে উঠতে পারছে না। দারিদ্রতা আর পারিবারিক অভাব অনটনের পাশাপাশি শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়ার পেছনে উপকূলের এই প্রান্তিক জনপদের শিশুদের লেখাপড়ায় রয়েছে হাজারো সমস্যা। ব্যতিক্রম নয় কুকরী মুকরীর এই আবাসনের শিশুরাও।

চরফ্যাশন উপজেলার কুকরী মুকরী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, 'বর্তমান সরকারের গুচ্ছগ্রাম আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে কুকরী মুকরী ইউনিয়নে ২৫০টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। হতদরিদ্র মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া উপহার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি করে ঘর পেয়ে এলাকার ছিন্নমূল মানুষরা অনেক খুশি।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,