আত্রাইয়ে বৃদ্ধার দায়িত্ব নিলেন ইউএনও
Published : Friday, 21 August, 2020 at 2:44 PM Count : 229
নওগাঁর আত্রাইয়ে ছেলে ও ছেলে বউয়ের অবহেলায় সত্তরোর্ধ অসুস্থ প্যারালাইসিস বৃদ্ধা জোহরা বেওয়ার দায়িত্ব নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছানাউল ইসলাম।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে জোহরা বেওয়ার অবস্থা সরেজমিন দেখার জন্য তার বাড়ি উপজেলার হাটুরিয়া গ্রামে যান ইউএনও।
টিনের বেড়া ও ছাউনির জানালাবিহীন ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে বুড়িমা কেমন আছেন ? আধ আধ কন্ঠে তুমি কে বাবা? আমি ইউএনও ছানাউল ইসলাম। কুটি থ্যাকা আচ্চ? (কোথা থেকে এসেছো) আত্রাই। শোনামাত্র বৃদ্ধা বলে ওঠেন, আমি তুমার মুখ দেখতে চাই।
লোডশেডিং এর কারণে বিদ্যুৎ না থাকায় মেঘলা আকাশ হওয়ায় দিনের বেলা অন্ধকার ছিল ঘরের মধ্যে। শোনামাত্র কোলে করে জোহরা বেওয়াকে বাইরে নিয়ে এলেন ইউএনও মো. ছানাউল ইসলাম। জোহরার মুখে সমস্ত কথা শুনে এক বস্তা চাল, ফলমূল, চিরা, গুড় দিয়ে বললেন আজ থেকে আপনার সমস্ত দায়িত্ব আমার।
জোহরা বলেন, বেঁচে থাক বাবা। তোমার মত সন্তান সকল বাবা-মার ঘরে জন্মাক দোয়া করি।
করোনা মোকাবেলায় গঠিত ওয়ার্ড কমিটির প্রধান ইউপি সদস্য আফজাল হোসেনকে অসুস্থ বৃদ্ধার প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ে দেখাশোনার নির্দেশ দেন ইউএনও।
খবর পেয়ে চালসহ খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়ে মানবতার হাত বাড়িয়ে দেন আত্রাই থানার ওসি মোসলেম উদ্দিন।
কথা হয় ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আফজাল হোসেন এবং গ্রাম প্রধান প্রতিবেশি আব্দুল বারিকের সঙ্গে। তারা জানান, স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায় গরীব হলেও সন্তানদের নিয়ে ভালো ভাবেই দিন কেটেছে সৈয়দ আলী ও জোহরা দম্পতির। সৈয়দ আলী মৃত্যুর পর জোহরা অনেক দিন ধরে প্যালাইসিসে পরে থাকায় সংসারিক অভাব অনটন বেড়ে যায়।
ছেলে জহির আলী জানান, প্রতিদিন কাজ করে সংসার চালাই আমি। টাকার অভাবে মায়ের ভালো চিকিৎসা করাতে পারছি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছানাউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি অত্যন্ত ব্যাথিত এবং মর্মাহত হয়েছি। আজ থেকে তার প্রয়োজনীয় সকল বিষয় আমি দেখাশোনা করবো।
এ সময় সমাজে বৃত্তবানদের অসহায়ের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ মুর্শেদ মিশু, আত্রাই প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক বৃন্দ ও গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।
-টিকেএস/এমএ