For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

নুন আনতে পান্তা ফুরায় গ্রেনেড হামলায় আহত মাহাবুবা পারভীনের

Published : Wednesday, 19 August, 2020 at 10:54 AM Count : 142

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে কন্যার মতো ভালোবাসেন। অথচ সাভারের বর্তমান কিংবা সাবেক সাংসদ এবং দলীয় নেতাকর্মীরা কেউই সহযোগীতা তো দূরের কথা ফোন করেও খবর নেয়না। 

তাই এখন আমার নুন আনতে পান্তা ফুরায় বলে অভিযোগ করলেন ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় আহত মাহাবুবা পারভীন।

কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, 'আমি রাজনীতি করতে গিয়ে সাভারের নেতাকর্মীদের ভালোবাসা না পেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপার ভালোবাসা পেয়েছি। তিনি দুই বার ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। প্রতি মাসে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার করে টাকা দিলেও আমার দলের নেতাকর্মীরা আমার জন্য কোন ফান্ড তৈরি করেনি। বর্তমানে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব মাঝে মধ্যে আমার খোঁজখবর নেন। তাছাড়া অন্য কেউ আমার খোঁজ নেয়না।'

তিনি আরও বলেন, 'গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে পড়ে থাকার সময় শত শত লোক প্রাণ বাঁচাতে ছুটোছুটি করে তার পা এবং শরীরের ওপর দিয়ে গিয়েছে। বেঁচে থাকার কারণে আজও সেই ব্যথা তাকে দুঃসহ যন্ত্রণা দেয়। মাঝে মধ্যেই ব্যাথার কারণে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়। এ জন্য গত মঙ্গলবারও পায়ের ব্যাথার কারণে সিআরপিতে গিয়ে টেষ্ট করিয়ে চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ ও থেরাপী নিয়ে এসেছি। চিকিৎসক বলেছেন- মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ব্যাথার জন্য থেরাপী দিয়ে যেতে হবে।'
মাহাবুবা পারভীন বলেন, 'আমি বর্তমানে ঢাকা জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। বিভিন্ন মিটিং, মিছিল ও দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার জন্য আমাকে ঢাকা যেতে হয়। সাভারের নেতাকর্মীদের অনেকেরই একাধিক গাড়ি থাকলেও আমার কোন গাড়ি নেই। তাদের কাছে আমি এতই অবহেলিত যে কেউ আমার খবর নেয়নি এবং কোন ফান্ড তৈরি করেনি। অথচ অসুস্থ্য হওয়ার আগে দলীয় সকল কর্মকাণ্ডে আমি সবার আগে ছিলাম।'

তিনি বলেন, 'আমি দুর্নীতি করবো না, ঘুষ খাবো না, কারণ প্রধানমন্ত্রীর বুকে আমার ছবি। দুর্নীতি, ঘুষ এগুলো আমাকে মানায় না। আমি ইতিহাসের পাতায় শ্রেষ্ঠ কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকার তদবির ফিরিয়ে দিয়েছি। আমি গ্রেনেড হামলার মামলার স্বাক্ষী। আমার বাসার গেট নেই, দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য কোন গাড়ি নাই। এটাও কি সম্ভব?'

তিনি আরও বলেন, 'আমার যতটুকু হায়াত আছে তা আমার নেত্রী শেখ হাসিনা আপার জন্য উৎসর্গ করলাম। আমার সুন্দর জীবনটা দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করে দিলাম। আমার চলাচলের ব্যবস্থা চাই। আত্মীয়-স্বজনদের থেকে টাকা ধার নিয়ে বাড়ির কাজে হাত দিয়েছি। বিভিন্ন দোকান থেকে বাকিতে মালামাল এনেছি, তারা টাকার জন্য ফোন করেন। আমি যেন ঋণগুলো পরিশোধ করতে পারি এ জন্য দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের কাছে সহযোগীতা চাই।'

২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় অংশগ্রহণ করেন মাহাবুবা পারভীন। সে দিন প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য শেষে ঠিক যখনই জয় বাংলা বলে শ্লোগান দেবেন ঠিক সেই মুহুর্তেই প্রাণঘাতী গ্রেনেড বিস্ফোরিত হতে থাকে। চলে গুলিবর্ষণও। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশে চালানো হামলায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৬ জন নিহত হয়। আহত হয় কয়েকশ মানুষ।

আহতদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন শরীরে অসংখ্য গ্রেনেডের স্প্রিন্টার নিয়ে প্রতিনিয়ত মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছেন তারাও। অনেকেই আবার চিরদিনের মতো পঙ্গু হয়ে গেছেন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া মাহাবুবা শরীরে ১৮শ স্প্রিন্টার নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তার বা হাত এখনও অচল, চোখে কম দেখেন, ডান কানে কম শোনেন, তার শরীরের চামড়ার ভেতরে ঘা হয়ে গেছে। কষ্ট হলেও মাহাবুবা পারভীন এখনও মাঝে মধ্যেই দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,