রাজধানীর তুরাগের চন্ডাল ভোগ এলাকার একটি বাসায় এক তরুণীকে (১৬) বিয়ে দেওয়ার কথা বলে ২৫ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ধর্ষক নাজির হোসেন (৪৮) ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার (৩০)কে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার তুরাগ থানাধীন চণ্ডালভোগ গ্রাম বালুর ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি বাসা থেকে পুলিশ ১৬ বছর বয়সী ওই তরুণীকে উদ্ধার করছে।
ডিএমপি তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল মোত্তাকিন আজ শনিবার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শুক্রবার রাতে চন্ডাল ভোগ এলাকা থেকে স্ত্রী সেলিনাকে ও আজ শনিবার সকালে তুরাগের ডিয়াবাড়ি থেকে ধর্ষক নাজির হোসেনকে আটক করে পুলিশ। শনিবার সকালে জিঞ্জাসাবাদ শেষে উক্ত স্বামী স্ত্রী উভয়কে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তুরাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: রফিকুল ইসলাম শনিবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গৃহকর্মী সেলিনা আক্তার তার স্বামী লেগুনার মিস্ত্রী নাজির হোসনেরে সঙ্গে ওই তরুণীকে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে র্ধষণ করিয়েছে। ঘটনা জানাজানি হলে নাজির কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
তুরাগ থানার ওসি নূরুল মোত্তাকিন বলেন, শুক্রবার রাতে স্থানীয়দরে কাছ থেকে খবর পেয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ানস্টপ সার্ভিসে ভর্তি করা হয়ছে। ওই তরুণীর অভিযোগের পরীপ্রেক্ষিতে গৃহকর্মী সেলিনাকে প্রথমে চন্ডাল ভোগের নিজ বাসা থেকে রাতেই আটক করা হয়। প্রাথমিক জজ্ঞিাসাবাদে সেলিনা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করছে। এ ঘটনায় ওই ধর্ষিতা তরুনী নিজেই বাদি হয়ে তুরাগ থানায় শুক্রবার রাতে একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নম্বর-(৫)। তারিখ-২৪/০৪/২০২০।
ওই তরুণীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষনের শিকার ওই তরুনীর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। করোনা সঙ্কটকালে্য শুরুর দিকে ঢাকায় কাজের সন্ধানে এসে আটকে যায়। এ সময় তুরাগ এলাকায় গৃহর্কমীর কাজ করা সেলিনার সঙ্গে মেয়েটির পরিচয় হয়। এ সময় সেলিনা তরুণীকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে প্রথমে ঢাকার আনন্দবাজারের বাসায় নিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে তুরাগের চন্ডালভোগ গ্রামের বালুর ট্রাক স্ট্যান্ট সংলগ্ন আব্দুল মান্নানের রিকসার গ্যারেজের ভেতরে (বস্তি) তার বাসায় নিয়ে যায়। এরপরই তার স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পক করার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে রাজি না হলে স্বামীর সঙ্গে তরুণীকে বিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেয়। তাতেও রাজি না হওয়ায় স্বামীর র্ধষণ করার ক্ষেত্রে সেলিনা সহায়তা করে। এভাবেই প্রায় ২৫ দিন মেয়েটিকে আটকে রেখে বিভিন্ন সময়ে র্ধষণ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার মেয়েটির মাথার চুল কেটে দেয়াসহ শারীরকিভাবেও তাকে নির্যাতন করা হয়। পরর্বতীতে শুক্রবার দুপুরে ধর্ষণের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় লোকজনের পরার্মশ মতে ওই তরুণী তুরাগ থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ওই রাতে সেলিনাকে তুরাগের চন্ডালভোগ গ্রামের বালুর ট্রাকস্ট্যান্ট সংলগ্ন বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নানের রিকসার গ্যারেজের ভেতরের বস্তির ঘর থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে, নির্যাতিতা এই প্রতিবেদককে অভিযোগ করে বলেন, আমি সরকার ও আদালতে কাছে ন্যায় বিচার চাই। যারা আমাকে নষ্ট করেছে,ধর্ষন ও নির্যাতন করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তি চাই। এই বলে সে কান্নয় ভেঙ্গে পড়েন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তুরাগ থানার এসআই মো: রফিকুল ইসলাম শনিবার জানান, তরুনীকে আটকে রেখে ধর্ষণ ও ধর্ষনের সহযোগিতা করার অপরাধে ধর্ষক (স্বামী) নাজির হোসেন ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে আটক করে আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে জিঞ্জাসাবাদ করার জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী স্ত্রী উভয়ের ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছে।
এইচএস