গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধী সৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী সমাধী সৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পরে তাঁরা স্বাধীনতার মহান স্থপতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ সময় তিন বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি সশস্ত্র দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
এরপর ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে তাঁরা অংশগ্রহণ করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধী সৌধের বেদীতে দলীয় সভাপতি হিসেবে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, তাঁর ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, স্পীকার ড. শীরিন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, আমির হোসেন আমু, মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহামুদ, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মতিয়া চৌধুরী এমপি, জুনায়েদ আহম্মেদ পলক এমপি, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এমপি, শেখ হেলালউদ্দিন এমপি, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, তোফায়েল আহমেদ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ নুরে-আলম চৌধুরী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রবেশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ।
সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে জাতির পিতার সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেন।
সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে তিনি ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে টুঙ্গিপাড়া হেলিপ্যাডে নামেন। এ সময় তাঁকে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ স্বাগত জানান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থান সাজানোর পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য তোরণ। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে জেলা ও উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়ায় আগমন উপলক্ষে জেলাব্যাপী ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বারগুলোতে তল্লাশী চৌকি বসানো হয়। টুঙ্গিপাড়াসহ বঙ্গবন্ধুর সমাধী সৌধ কমপ্লেক্স এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশসহ বিভিন্ন আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা পোষাকে ও সাদা পোষকে দায়িত্ব পালন করছেন।
এই সময়ে যেহেতু দেশে করোনা ঝুঁকি আছে, তাই শিশুদের ঝুঁকির বাইরে রাখতে শিশু সমাবেশ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের প্রবেশদ্বার থেকে টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতার সমাধি সৌধ পর্যন্ত ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ও গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফুল গাছসহ রাস্তার পাশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগিয়ে শোভা বর্ধন করা হয়েছে।
এছাড়াও, মুকসুপুর মোড়, কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া মোড়, ওভার ব্রিজ, সদরের পুলিশ লাইনস মোড়, বেদগ্রাম মোড়, ঘোনাপাড়া মোড়, টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাবে লাইটিং-এর ব্যবস্থা করা ছাড়াও মাজার কমপ্লেক্স ও এর আশপাশের এলাকায় লাইটিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে পৌর এলাকার মধ্যে রাস্তার পাশের ভবন, টিনের ঘর, বেড়া, ব্রীজ লাল-সবুজ রং করে পতাকার রংয়ে সাজিয়ে তুলেছে।
এছাড়া, গোপালগঞ্জের প্রবেশদ্বার মুকসুদপুর থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তার উপর শত শত তোরণ নির্মাণ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
-এমএইচএম/এমএ