মেহেরপুরে ফের দেখা মিললো জার্ডনের হরবোলা পাখি
Published : Monday, 9 March, 2020 at 1:04 PM Count : 555
এই বসন্তে মেহেরপুরে ফের দেখা মিললো জার্ডনের হরবোলা পাখি। মেহেরপুর বার্ড ক্লাবের সভাপতি ও পাখি গবেষক এম এ মুহিত ২০১৬ সালে স্থানীয় সহিউদ্দীন ডিগ্রী কলেকে এই পাখিটি প্রথম সনাক্ত করেন। তখন থেকেই তিনি পাখিটি নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছেন।
কয়েক দিন আগে এই বসন্তে ওই কলেজের পলাশ গাছে জার্ডনের হরবোলা স্ত্রী ও পুরুষ পাখির বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। তাদের মিষ্টি সুরে প্রকৃতি মুখরিত হয়। বাংলাদেশের অনেক পাখি প্রেমী সহিউদ্দীন ডিগ্রী কলেজ প্রাঙ্গণে আসেন পাখির ছবি ধারণের জন্য।
পাখি গবেষক মুহিত বলেন, বাংলাদেশে তিন প্রজাতির হরবোলা রয়েছে। এদের নাম সোনা কপালি-হরবোলা, নীলডানা-হরবোলা এবং কমলা পেট-হরবোলা। এই নতুন পাখিটির ইংরেজি নাম জার্ডন্স লিফবর্ড। বৈজ্ঞানিক নাম Choopssedoni. জার্ডন্স- লিফবার্ডের বাংলা কোন নাম নেই। বাংলাদেশের বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক পাখিটির বাংলা নাম রেখেছেন জার্ডনের-হরবোলা।
তিনি বলেন, 'এরা জঙ্গল ও অরণ্যে ঘুরে বেড়ায়। পাখির শরীরটা দেখতে সবুজ, মাথা হলুদ রঙের এবং গলার ওপরে কালো রঙের দাগ আছে। এরা পোকা, ফল ও ফুলের মধু খায়। এই প্রজাতির পাখি গাছে বাসা তৈরি করে এবং ২-৩টি ডিম দেয়। এই বিরল প্রজাতির পাখি সচরাচর দেখা যায়না। এই পাখিটির আরো একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেটি হলো যেকোন পাখির ডাক হুবহু নকল করতে পারে। এ কারণে একে বলা হয় হরবোলা।
মুহিত বলেন, 'জার্ডনের-হরবোলা মেহেরপুর সহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলাদেশের নতুন পাখি হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেও এখন এই পাখি বাংলাদেশের সুলভ পাখি হয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের মেহেরপুরের পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গার পাখি বিশারদ বকতিয়ার হামিদ জার্ডনের-হরবোলা সনাক্ত করেন। এখন এই পাখিরা দিন দিন আমাদের আবাসিক পাখি হয়ে যাচ্ছে।'
সহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশের সহকারী অধ্যাপক ও মেহেরপুর বার্ড ক্লাবের উপদেষ্টা মাসুদ রেজা বলেন, 'আমাদের কলেজে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি ও ফলদ গাছ থাকার কারণে এই পাখিদের বিচরণ আমার চোখে বেশি পড়ে। কারণ আমি গাছ নিয়ে গবেষণা করি বলে প্রতিদিন বিকেলে আমাকে গাছের পরিচর্যা করতে হয়। তাই পাখিদের সঙ্গে আমার একটা নিবিড় সম্পর্ক আছে। বসন্তে পলাশ ফুল ফুটলেই এদের আনাগোনা বেশি দেখা যায়।'
পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র নিয়ে কাজ করে সুবাহ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি বেসরকারি সংগঠন। এর উপ নির্বাহী পরিচালক রফিকুল আলম বলেন, 'এবার বসন্তে জার্ডনের-হরবোলা পাখিদের দেখার জন্য আমি মেহেরপুর সহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজে গিয়েছিলাম। পলাশ ফুলে এই পাখিদের বিচরণ ও ডাক আমাকে খুব মুগ্ধ করেছে। এই পাখি সংরক্ষণ করার জন্য অভয়ারণ্য সৃষ্টির উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।'
-এমআরএ/এমএ