আশুলিয়ায় উৎপাদন স্বাভাবিক, বন্ধ রয়েছে ২২টি কারখানা
Published : Thursday, 19 September, 2024 at 5:38 PM Count : 62
গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শ্রমিকদের নানা দাবিতে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় তৈরী পোশাক শ্রমিকরা যথাসময়ে নিজেদের কর্মস্থলে প্রবেশ করে কাজে যোগদান করায় কর্মমূখর হয়ে উঠে কারখানার পরিবেশ। এদিকে উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ায় মালিকরাও সন্তোষ প্রকাশ করে যথাসময়ে তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে। তবে এখনও দাবি আদায়ে মালিক পক্ষের সাথে বনিবনা না হওয়ায় ২২টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার নরসিংহপুর হা-মীম গ্রুপ, নিট এশিয়া, শারমিন গ্রুপ, সরকার মার্কেট এলাকার নেক্সট কালেকশন, বান্দুডিজাইন, বাগবাড়ির ডেবনিয়ার, জামগড়ার দি-রোজ, পলমল, ছয়তলার এনভয়, নিশ্চিন্তপুরের অনন্ত গার্মেন্টসসহ অধিকাংশ কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
এদিকে অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারায় ২০ টি কারখানা বন্ধ রেখেছে মালিকপক্ষ। এছাড়া কারখানায় প্রবেশের পর কাজ না করায় আরও ২টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে। এছাড়া বাকি সব পোশাক কারখানায় পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন।
ইউরো আর্থ এপ্যারেল লিমিটেডের শ্রমিক মোহাম্মদ শুভ বলেন, কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা প্রবেশ করে বিভিন্ন দাবিতে কাজ বন্ধ করে বসে থাকে। শ্রমিকরা মূলত সমস্যা সমাধান করতে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছেন। আবার কয়েকটিতে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হলেও অগ্রগতি হচ্ছে না।
বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি অরবিন্দ বিন্দু বেপারী বলেন, শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ রয়েছে বেশকিছু কারখানা। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় কারখানাগুলোতে সুষ্ঠ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তাই বন্ধ কারখানাগুলো অবিলম্বে খুলে দিতে আমরা মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএ’র কাছে অনুরোধ করেছি।
তিনি আরও বলেন, কারখানা বন্ধ রাখা কোনো সমাধান নয়। খুলে দিয়ে মালিকপক্ষের উচিত শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা। এছাড়া কারখানা বন্ধ থাকা নিয়ে নতুন করে যাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয় সেজন্য দ্রুত বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোঃ সারোয়ার আলম বলেন, শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে কোন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেনি। তবে শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় ২০ টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। যেগুলো গত সপ্তাহের বিভিন্ন সময় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আরও ২ টি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে। আমরা বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দেয়ার জন্য বিজিএমইএ ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি। আগামী শনিবারের মধ্যে শিল্পাঞ্চলের অবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে ইনশাআল্লাহ।
এছাড়া যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এবং শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় বিভিন্ন কারখানার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর টহল কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
ওএফ/এসআর