কৃষিমাঠে বালুদস্যুর থাবা!
Published : Tuesday, 3 September, 2024 at 4:36 PM Count : 120
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের কামারের বিল নামক মাঠে ধান ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করেন কৃষকরা। এরই মধ্যে সেই মাঠে থাবা দিয়েছে সোবহান মিয়া নামের এক অসাধু ব্যক্তি। সেখানে কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে বালু বাণিজ্য অব্যাহত রাখায় কৃষক হারাচ্ছে তাদের ফসলি জমি। আর নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ জনপদের মেঠোপথ।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) উপজেলার খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের কুজাখোলা মৌজার কামারের বিলে দেখা গেছে- কৃষিমাঠ থেকে বালু উত্তোলনের দৃশ্য। এখানে কথিত সোবহান মিয়া মেশিন বসিয়ে নির্বিকারে বালু বাণিজ্যে মেতেছেন। তার এই ভয়াল থাবায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আশপাশের কৃষকরা।
বালুদস্যু হিসেবে পরিচিত এই সোবহান মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া-তুলশীঘাট এলাকায়। তিনি কতিপয় দায়িত্বশীলদের ম্যানেজ করে নির্বিকারে বালু উত্তোলন করে আসছেন। ব্যাপক দাম্ভিকতার কারণে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস না পাওয়া অসহায় হয়ে পড়ছেন বলে ভুক্তভোগি মানুষের অভিযোগ।
এলাকাবাসী জানায়, বালুখেকো সোবহান মিয়া এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং একশ্রেণির অসৎ দায়িত্বশীদের ছত্রছায়ায় মহাদাপটে বালু বানিজ্য করছেন। এ কারণে প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না। তার এই বালুদস্যুতা কর্মকাণ্ড চলতে থাকায় নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি। আর ট্রাক্টরযোগে এসব বালু বিক্রির জন্য অন্যত্র বহন করা ক্ষতি হচ্ছে রাস্তাঘাট। ধুলাবালিতে দূষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।
স্থানীয় আব্দুল মালেক মিয়াসহ আরও একাধিক কৃষক ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, কামারের বিলে আমাদের চাষযোগ্য জমি রয়েছে। এসব জমির পাশে সোবহান মিয়া রাতের বেলায় মেশিন দিয়ে অবাধে বালু তুলছেন। আর দিনরাতে এসব বালু ট্রাক্টরযোগে বিক্রি করেছে বিভিন্ন স্থানে। তার এই অপকর্ম অব্যাহত থাকায় আমরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এই বালু বানিজ্য বন্ধে জোর দাবি করছি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক সচেতন ব্যক্তি বলেন, শুধু সোবহান মিয়াই নয়, সাদুল্লাপুর উপজেলার ঘাঘট নদীসহ বিভিন্ন ফসলি মাঠ থেকে বালু কারবারে মেতেছেন বালুদস্যুরা। এই দস্যুতার মধ্যে হাসেন আলী নামের একজন শীর্ষ বালুখেকো রয়েছে। এসব সোবহান-হাসেনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চুপ কেনো প্রশাসন- এমন প্রশ্ন অনেকের।
এ বিষয়ে কুজাখোলার কামারের বিলে সরেজমিনে যাওয়া হলে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত কৌশলে পালিয়ে যায় বালু কারবারি সোবহান মিয়া। এ কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সাদুল্লাপুরের খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা প্রভঞ্চন কুমার রায় বলেন, কামারের বিলসহ বিভিন্ন কৃষিমাঠে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু বাণিজ্যে বন্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দরকার বলে মনে করেন তিনি।
টিএইচজে/ এসআর