রোমান হত্যা, ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাসহ আসামি ৩ শতাধিক
Published : Monday, 26 August, 2024 at 1:36 PM Count : 71
মাদারীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে রোমান ব্যাপারীকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে নিহতের স্ত্রী কাজল আক্তার বাদি হয়ে সদর মডেল থানায় এ মামলা করেন।
রোববার বিকেলে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম সালাউদ্দিন এ তথ্য জানান।
নিহত রোমান ব্যাপারী (৩২) সদর উপজেলার ভদ্রখোলা এলাকার আমর ব্যাপারীর ছেলে। পেশায় তিনি পিকআপভ্যানের চালক ছিলেন।
মামলায় মাদারীপুর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নোবেল ব্যাপারীকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। জেলায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত তিন জনের মধ্যে এটাই প্রথম মামলা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মামলায় রাস্তি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মো. বেল্লাল মোল্লাকেও আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা ছাত্রলীগ নেতা নোবেল ব্যাপারী ও বেল্লালের অনুসারী। এদিকে, নোবেল ও বেল্লাল দু'জনই মাদারীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মস্তফাপুর গোল চত্বর থেকে নতুন বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল। খাগদী বাসস্ট্যান্ডের দিকে এলে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ঠেঁকাতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গুলিও ছোড়া হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরতর আহত হন রোমান ব্যাপারী (৩২) ও তাওহীদ সন্নামাত (২০)। দু'জনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে চরমুগরিয়া আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দু'জনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) আন্দোলনে প্রথম মারা যায় দীপ্ত দে নামে এক কলেজছাত্র। দীপ্তর পরিবার এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না করলেও রোমানের স্ত্রী কাজল আক্তার ও নিহত তাওহিদের আত্মীয় কামরুল ইসলাম বাদি হয়ে পৃথক দুটি হত্যা মামলা করেছেন।
মামলার বাদি কাজল আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী ছাত্র-জনতার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতেই সে দিন মিছিলে গিয়েছিলেন। বিনা কারণে একদল সন্ত্রাসী তাকে গুলি করে হত্যা করে। আমরা এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম, দেখি কেউ আমাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে কি না। কেউ এগিয়ে আসে নাই। তাই মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই আমি।’
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত রোমানের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। তবে, এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।’
-এএইচ/এমএ