চরফ্যাশনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা
Published : Thursday, 8 August, 2024 at 11:15 AM Count : 133
মাত্র কয়েক দিন আগেও যেখানে লাঠি হাতে অধিকার আদায়ে নেমেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, সেই তারাই এবার ফুটপাতের আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। আবার কেউ কেউ সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন। তারা কেউই ট্রাফিক বা পৌরসভার পরিচ্ছন্ন বিভাগে চাকরি করেন না। তারপরও পৌর শহরের সৌন্দর্য বাড়াতে ও সড়কের যান চলাচলের শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছেন এসব ছাত্ররা।
ছাত্রদের এ রকম কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ভোলার চরফ্যাশনের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
সরকার পতনের পরে আইন-শৃঙ্খলা ও প্রশাসনের ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে বুধবার থেকে উপজেলার সদর রোডে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পাশাপাশি উপজেলা আনসার-ভিডিপির সদস্যরাও কাজ করেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ভূমিকার পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন কর্মীরও দায়িত্ব পালন করেন।
চরফ্যাশন পৌর শহরের মোড়ে মোড়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে চরফ্যাশনে কয়েকদিন ধরে সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ সময় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মিছিল স্লোগান ও সমাবেশ করে নিজ দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। কয়েকদিন ধরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সড়কে পরে থাকা আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে দেখা না যাওয়ায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের খালি ও বিস্কুটের প্যাকেটসহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত এই শিক্ষার্থীরা।
পৌর সদরের থানা রোড মোড়ের বাসস্ট্যান্ড, চক রোড ও কলেজ রোড মোড়ের রিকশা স্ট্যান্ড এবং জনতা রোড মোড়সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের রাস্তায়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করেছে। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দেন ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শিফাত উল্লাহ।
তিনি বলেন, যেহেতু ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশটা দ্বিতীয় বার স্বাধীন হয়েছে তাই শহীদ ভাইদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। দায়িত্ব পালনে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের সহযোগীতা কামনা করেন শিফাত।
জানা গেছে, দায়িত্ব পালনকারী ৮ শিক্ষার্থীর বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। ছাত্ররা যেখানে সেখানে যেকোনো যাত্রীবাহী গাড়ি, ট্রাক-লড়ি, রিকশা, মোটরসাইকেল দাঁড়াতে দিচ্ছে না। মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট না থাকলে হেলমেট পরার পরামর্শ দিচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে প্রশংসা করেন বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নওরীন হক বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে ছাত্ররা নিজ উদ্যোগে যে দায়িত্ব পালন করছেন আমি তাদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
-এসএফ/এমএ
