বাড়ছে পানি, কাঁদছে মানুষ
Published : Thursday, 4 July, 2024 at 10:55 AM Count : 253
কবি বলেছেন, মেঘ দেখে তুই করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। কিন্তু সব মেঘের আড়ালেই সূর্য হাসে না। কিছু কালো মেঘ জীবনের দুর্দশাও ডেকে নিয়ে আসে। এমনি দুর্বিষহ চিত্র দেখা যায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা পাড়ের মানুষদের।
কয়েকদিনে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পানি বেড়ে সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে পাটসহ বিভিন্ন ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীতে বিলীন হচ্ছে।
উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চণ্ডীপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতি বছর তিস্তায় পানি বাড়লে বা বন্যা দেখা দিলেই শুরু হয় নদীভাঙন। যে ভাঙন চলতে থাকে কয়েক মাসব্যাপী।
নদীপাড়ের মানুষের অভিযোগ, সরকার স্থায়ী ভাবে নদীভাঙন রোধে উদ্যোগ না নেওয়ায় প্রতি বছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়িসহ কয়েক হাজার একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে।
উজান তেওড়া গ্রামের ফকরুল মিয়া বলেন, আমরা ত্রাণ চাই না নদী শাসন চাই।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের ডা. শরিফুল মিয়া বলেন, প্রতি বছর নদী ভাঙনে ভুক্তভোগী চরবাসীকে বার বার ঘর-বাড়ি সরাতে হচ্ছে। কিন্তু আজও স্থায়ী ভাবে নদীভাঙন রোধের কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, অনেকের ঘর তলিয়ে যাবার কারণে ঠিকমতো চুলাও জ্বলছে না। ফলে তাদের অনাহারেই থাকতে হচ্ছে। গবাদি পশুরও ঠিকমতো খাবার দিতে পারছেন না তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিফ মণ্ডল জানান, ফের তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। উপজেলার কিছু কিছু চরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ভুক্তভোগীদের খোঁজখবর রাখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে ত্রাণ সরবরাহ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, ভাঙন ঠেকানোর জন্য উপজেলা প্রশাসনের তেমন করণীয় কিছু নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ী ভাবে ভাঙন রোধে প্রকল্প নেওয়ার বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
-এসএ/এমএ