রাজশাহীতে ৩০ শিশুকে যৌন নিপীড়ন, শিক্ষক গ্রেপ্তার
Published : Monday, 20 May, 2024 at 5:19 PM Count : 171
রাজশাহী মহানগরীতে ১০ বছরের কম বয়সী ৩০ জন শিশুকে (স্কুলছাত্র) যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আবদুল ওয়াকেল (৩৩) নামের এক শিক্ষককে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গত শনিবার মহানগরীর ডাঁশমারী এলাকা থেকে ওয়াকেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরআগে যুব অধিকার পরিষদ’র রাজশাহী জেলা কমিটি’র সভাপতি আবদুল ওয়াকিল ওরফে রাসেলকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ করে তার পরিবার।
ওয়াকিলের স্ত্রী শ্যামলী খাতুন গত শুক্রবার জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে সাদা পোশাকে সাত-আটজন ব্যক্তি তাদের বাসায় যান। তারা অটোরিকশাযোগে এসেছিলেন। ওয়াকেলকে নিয়ে তারা অটোরিকশাতেই ফিরেছেন। যারা বাসায় এসেছিলেন তারা নিজেদের সিআইডি সদস্য হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন।
সিআইডি বলছে, যৌন নিপীড়নের দৃশ্যগুলো ওই শিক্ষক ভিডিও ধারণ করে নিজের মুঠোফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার এবং এক্সটার্নাল হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করতেন। এসব ডিজিটাল ডিভাইস থেকে সার্চ ইঞ্জিন গুগল, মাইক্রোসফট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এসব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড অ্যাক্সপ্লয়েট চিলড্রেন (এনসিএমইসি) নামের এক প্রতিষ্ঠানের কাছে। এনসিএমইসি বাংলাদেশে সিআইডিকে এসব তথ্য সরবরাহ করে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এনসিএমইসির তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডির একটি বিশেষায়িত দল তদন্ত শুরু করে। স্থানীয় ভুক্তভোগী অনেক ছাত্র ও তাদের অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তকারী দলের কাছে শিক্ষক ওয়াকেলের বিরুদ্ধে ‘ভয়ংকর’ সব তথ্য দেন।
প্রাথমিক তদন্তে সিআইডি জানায়, আবদুল ওয়াকেল মহানগরীর কাটাখালীর আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক। ছাত্রাবস্থায় তিনি একটি একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতেন। তখন থেকেই তিনি কোচিংয়ের ছাত্রদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সখ্য গড়ে তুলতেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীদের কৌশলে কোচিং সেন্টার, নিজ বাড়িতে অথবা কখনো কখনো আশেপাশের বাগানে নিয়ে যেতেন। শিশু-কিশোর ছাত্রদের চকলেট এবং মোবাইল গেম খেলতে দিতেন।
তারা যখন গেম নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকত তখন তাদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করতেন তিনি। আগে থেকেই সেট করে রাখা মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে তা সংরক্ষণ করে রাখতেন ওয়াকিল। নিপীড়নের শিকার শিশুরা সবাই তার ছাত্র ছিল।
এ ঘটনায় ওয়াকেলের বিরুদ্ধে তাঁর বর্তমান কর্মস্থলের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। সেই মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
আরএফ/এমবি