For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

বাউফলে ডায়রিয়ায় শিশুর মৃত্যু

Published : Tuesday, 23 April, 2024 at 9:04 PM Count : 94

পটুয়াখালীর বাউফলে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। ধারন ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন বেশি রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে বেড সংকট থাকায়  বাধ্য হয়ে মেঝেতে ঠাঁই নিয়েছেন রোগীরা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার রাতে  ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রিনা (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রিনা উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামের রহিম গাজীর মেয়ে। 

ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. মিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শিশুটি তিন দিন আগে ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়। পরিবারের লোকজন হাসপাতালে না এনে বাড়িতে রাখেন। গতকাল রাতে তার মৃত্যু হয়। শিশুটি মারা যাওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।   যথাসময়ে চিকিৎসা পেলে শিশুটির প্রাণ বাঁচানো যেত। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের  হিসাব বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, মার্চের  মাঝামাঝি সময় থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। গত এক মাসে ৩৮৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত ৭দিনে ভর্তি হয়েছেন ৯৬জন। আর সর্বশেষ ২৪ঘন্টায় ১৫জন  হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ও জরুরি বিভাগ থেকে গত ৭দিনে দেড় শতাধিক রোগীর চিকিৎসা নেওয়ার তথ্য পাওয়া গছে।  এসব রোগীর প্রায় ৭০ শতাংশই শিশু ও বয়স্ক। 
 তবে উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও তিনগুন বেশি বলে দাবি করেছেন একাধিক চিকিৎসক। 

চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, হাসপাতালে বেড সংকট থাকায় অনেক  ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে আসছেন না। তারা স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও বিভিন্ন চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন। যার সংখ্যা হাজারের অধিক। 

মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায়  শিশু, নারী ও পুরুষ ওয়ার্ডে বেড খালি না থাকায় মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।  

উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ থেকে আসা মরিয়ম বেগম (২৬) নামে ওই নারী জানান, সোমবার থেকে তার আড়াই বছরের শিশু সন্তান বার বার পাতলা পায়খানা করছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে নিয়ে  হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক তার সন্তানকে স্যালাইন দেন। তবে  হাসপাতালে জায়গা না থাকায় সন্তান নিয়ে দাড়িয়ে আছেন।

মেঝের নোংরা-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে গাদাগাদি করে অবস্থান নিতে হয়েছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। তীব্র গরমে ফ্যান না থাকায় হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন রোগীর স্বজনরা। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা।

সমীর শীল নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, কোনো বেড খালি না থাকায় মেঝেতেই বিছানা পেতে অবস্থান নিয়েছেন তারা। তবে মেঝের চারপাশে নোংরা পরিবেশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। এতে একদিকে দুর্গন্ধ অন্য দিকে তীব্র গরমে রোগীর অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।

হঠাৎ করে উপজেলা জুড়ে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইনের সংকটও দেখা দিয়েছে। সরকারি হাসপাতালে চাহিদার তুলনায় কম স্যালাইন সরবরাহ থাকায় বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে রোগীদের। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে চড়া দামে স্যালাইন বিক্রি অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

রোগীর স্বজনরা বলছেন, হাসপাতাল থেকে ২/১টি স্যালাইন দেওয়া হয়। বাকি স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়।  এতে স্যালাইনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ফামের্সী ব্যবসায়ীরা ১শ টাকার স্যালাইন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। 
 
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: প্রশান্ত কুমার সাহা সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন সরবরাহ না থাকায় সংকট দেখা দিয়েছে। আমি  ব্যক্তিগতভাবে ২০০ ব্যাগ স্যালাইন দিয়েছি। তা দিয়েই চিকিৎসা চলছে। আরও ২০০ ব্যাগ অর্ডার দেয়া হয়েছে। সংকটের কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নিবেন। 

এএস/এসআর


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,