For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

'রমজানে মানুষের কষ্ট লাঘবে বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করছি'

Published : Monday, 25 March, 2024 at 12:58 PM Count : 128

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রমজান মাসে দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, তার জন্য আমরা মানুষের মাঝে বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করছি। আমরা ইফতার পার্টি বাদ দিয়েছি, আমাদের নেতাকর্মী, প্রতিষ্ঠান সবাইকে আহ্বান করেছি, ইফতার পার্টি না করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইফতার বণ্টন করতে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে।

সোমবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইফতার খাওয়াটা বড় কথা না, মানুষকে দেওয়াটাই বড় কথা। আমরা খাওয়ার বিষয়টা বাদ দিয়ে দেওয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। মানুষের যাতে কোনো রকম কষ্ট না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখেছি।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারির অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলেছে, অপরদিকে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ-স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন, আরো কঠিন অবস্থা করে দিয়েছে যে সমস্ত পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়। পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে, মূল্য বেড়ে গেছ, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সমস্যা শুধু আমাদের না, এটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা হত্যা করার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃতি করা হয়েছিল। ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা এদেশে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, সেই জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার হবে না, সে আইন করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে, রাজনীতি করার অধিকার দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যারা মা-বোনদের পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছিল, তাদের ক্ষমতা বসানো হয়েছিল। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার যে লক্ষ্য, আদর্শ তার থেকে উল্টো পথে যাত্রা শুরু করে। আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা বিজয় অর্জন করেও, বিজয়ের কথা বলতে পারিনি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু রাষ্ট্র দেননি, বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, সেই পথরেখাও তিনি দেখিয়েছেন। আবার বঙ্গবন্ধুর কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বসেনি ভারত। যে উদ্দেশ্যে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ও হারানো গৌবর ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ। ৭৫ পরবর্তী মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচয় দিতে ভয় পেতেন, বিজয়ী জাতি তাদের পূর্বের কথা বলতে পারত না। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের হারানো গৌরব ফিরিয়ে এনেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলে, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে আমার এগিয়ে যাবো। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, এটাই আমাদের নীতি। তারপরও দেশে কিছু মানুষ আছে যারা আগুন সন্ত্রাস করে, অগ্নিসন্ত্রাস না করে, তাদের সুমতি হোক সেটাই চাই আমরা।
 
জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে যে মিলিটারি ডিক্টেটর ক্ষমতায় এসেছিল, তারাও এ দেশে একাত্তরের মতোই গণহত্যা চালিয়েছিল। আমাদের সেনা অফিসারদের একের পর এক হত্যা করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং এরপরে নির্বাচনী প্রহসন, দল গঠন, দল ভাঙন। নানান ধরনের খেলা ২১টি বছর আমাদের ওপর চলেছে।

সরকার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এই বাংলাদেশের একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, ঠিকানাবিহীন থাকবে না। প্রতি ঘরে ঘরে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। শিক্ষার হার বৃদ্ধি করেছি, দারিদ্র্যের হার কমিয়ে এনেছি, উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, যারা স্ব-উদ্যোগে মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করাই সব থেকে বড় কথা। এই পুরস্কার শুধু পুরস্কার নয়, আরো অনেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহী হবে, সেটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা দেশের বিভিন্ন স্তরে মানুষের কল্যাণে কাজ করা এমন আরো লোকদের বের করে পুরস্কৃত করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য স্থির করে আমরা আগাচ্ছি। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। স্বাধীনতার মাসে এটাই আমাদের প্রত্যয়। স্বাধীনতার মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, গণহত্যায় জড়িতদের প্রতি ঘৃণা জানাই। আর যেন এরকম না হয়। এখনও ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে, আমরা এটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা চাই এই গণহত্যা বন্ধ হোক। আমরা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের ভয়াবহতা কেমন আমরা জানি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি করায় অনেক কষ্ট করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। একটাই লক্ষ্য ছিল, বাবার কাছ থেকে তার স্বপ্ন জনতাম বলে সে আলোকে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। আমরা বাংলাদেশের সে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তনে। এখানে কেউ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না। সবাই খাদ্য, চিকিৎসা পাবে, সেই ব্যবস্থা করছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন, একটি স্বাধীন জাতি। যে জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ ভূখণ্ড পাবে। তিনি এজন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি অল্প সময় পেয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনি একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলেছিলেন। এটা এত সহজ ছিল না। কিন্তু জাতির পিতা শেখ মুজিবের মতো নেতৃত্ব ছিল বলে সম্ভব হয়েছে। তিনি মাত্র তিন বছরের মধ্যেই দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ঘুনে ধরা সমাজ তিনি ঢেলে সাজাবেন। তাই করেছেন। কিন্তু সেই সময়ই আসল আঘাত। স্বপরিবারে তাকে জীবন দিতে হলো। দুর্ভাগ্য আমাদের।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,