এজে আর কুরিয়ারের পরিচালককে গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন ও অভিযোগ
Published : Tuesday, 12 March, 2024 at 9:41 PM Count : 504
এজে আর কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামসু উদ্দিন আহমেদ রিয়াদকে (৪৫) গ্রেফতারের দাবিতে ডিএমপি কমিশনার বরারব অভিযোগ দায়ের এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সম্প্রতি মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্ত পেতে ডিএমপি কমিশনার বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব জেলার বেকারদের দেবেন কর্মসংস্থান, করবেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে কীভাবে এই দেশকে জাগিয়ে রাখা যায় সেই গবেষণা থেকেই একটি থিউরি আবিষ্কার করেন ‘এজেআর কুরিয়ার সার্ভিস’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামসু উদ্দিন আহমেদ রিয়াদ (৪৫)।
নিজ থিউরি অনুযায়ী, রিয়াদ বিভিন্ন জেলার অর্ধশিক্ষিত বেকারদের চাকরি দেওয়ার নাম করে নিয়ে আসেন ঢাকায়। তাদের কাছ থেকে ব্ল্যাঙ্ক চেক ও ৩-৪টা করে ফাঁকা স্ট্যাম্প জামানত হিসাবে নেন। চাকরিতে কিছুদিন যেতে না যেতে বিভিন্ন অজুহাতে রিয়াদ তাদের করেন চাকরিচ্যুত। পরবর্তীতে রিয়াদ ফিরেন তার আসল চেহারায়। ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্পে মোটা অঙ্কের টাকা বসিয়ে রিয়াদ দেন চেক ডিজঅনার মামলা।
সম্প্রতি মাসুদ হোসাইনসহ বেশ কয়েক ভুক্তভোগী ডিএমপির পুলিশ কমিশনার বরাবর অভিযোগ করলে ওঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এই বিষয়ে এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়েছেন। ১০ লাখ টাকা চুরির মামলায় ১ মাস কারাগারে থেকে জামিনে বের হলে পুনরায় আমাকে দেওয়া হয় আরেকটি চেকের মামলা। এই মামলায় দেখানো হয় ১৩ লাখ টাকা, চুরির মামলার কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি বলে মামলাটি আদালত থেকে খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমাকে ওই চেকের মামলার রায় হয়ে যাবে বলে ভয় দেখায়। একপর্যায়ে আমি ৪ লাখ টাকায় রফা করি, ৪ লাখ টাকা আমি গ্রামের বাড়ি থেকে ধার করে এনে দিলেও এখনো আমাকে কোনো লিখিত কাগজ দেয়নি, কাগজ চাইলে বলে পরে আসেন।
আরেক ভুক্তভোগী এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা রুবেল বলেন, আমার নামে প্রথমে ৮ লাখ টাকার একটি চুরির মামলা দেয়। রংপুরে আমি ৪৪ দিন কারাগারে ছিলাম, জামিনে বের হওয়ার পর ওই যে আমার চাকরিতে যোগদানের সময় একটি ব্ল্যাংঙ্ক চেক ছিল, সেই চেকে আমাকে আবার ১৬ লাখ টাকার মামলা দেয় ঢাকার আদালতে। মামলা তোলার জন্য বারবার অফিসে গেলে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে।
এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের আরেক ভুক্তভোগী সাবেক কর্মকর্তা মফিজদ্দিন (২৫) বলেন, মামলাবাজ এমডি আমাকে মোট ৫টা মামলা দিয়েছে। তার মধ্যে একটা চুরির মামলা, একটা হাফ মার্ডার মামলা, একটা অপহরণ মামলা, ২টা চেকের মামলা।
আরেক ভুক্তভোগী মাসুদ হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ২০১১ সাল থেকে এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসে কর্মরত ছিলাম। চাকুরিতে নিয়োগের সময় কোম্পানিটি আমার একটি ব্ল্যাঙ্ক চেক রাখে ফেরতযোগ্য বলে। কোম্পানির বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি দেখে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিই। অব্যাহতির ২ বছর পর কোম্পানিটিতে থাকা আমার ওই ব্ল্যাঙ্ক চেকে আমাকে ২৯ লাখ ২৭ হাজার ৬০০ টাকার একটি মামলা দেয়। কাগজে-কলমে কোম্পানিটির কাছে আমি ৫ মাসের বেতন পাই, সেটা না দিয়ে উলটো আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে প্রতিনিয়ত। তাই আমি কোম্পানির মামলাবাজ মালিক রিয়াদের যথাযথ শাস্তি দাবি করছি।
এজে আর কুরিয়ার সার্ভিসের রিয়াদের বিষয়ে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃআশরাফ বলেন, এমই একটি অভিযোগ আমরা ডিএমপি কমিশনার স্যারের অফিস থেকে পেয়েছি। আমরা তদন্ত করছি। সত্যতা পেলে নিয়মিত মামলা নিবো।
এই বিষয়ে রিয়াদের কাছে জানতে তার নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এসআর