‘জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২’এ সেবা খাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে হোটেল ও রেস্তোরাঁকে। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি দীর্ঘদিন ধরে এ খাতকে শিল্প হিসেবে ঘোষণার দাবি করে আসছিল। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভা এই নীতির অনুমোদন দেয়। অবশেষে গেজেট প্রকাশ হওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। গেজেটে সেবা খাতের পঞ্চম অবস্থানে রাখা হয়েছে হোটেল ও রেস্তোরাঁ শিল্পকে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে।
তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, অপরিকল্পিতভাবে ভবনের প্রতিটি সিঁড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার ছিলো ডজনে ডজনেভ যার কারনে দ্রুত সময়ে আগুন ছডিয়ে পড়েছে পুরো ভবনে। এমন ঘটনা ভবন কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও রাজউক তদন্ত কমিটি।
বেইলী রোডের ঘটনার পরপরই টনক নড়েছে রাজউকসহ অন্যন্যা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার। বেইলী রোড়ের ঘটনার সূত্রধরে রাজউক রাজধানী বিভিন্ন এলাকায় সরকারী অনুমোদিত ভবনের রেস্টুরেন্টগুলো কোনো লিখিত নোটিশ ছাড়া বন্ধ করে দেয় বলে দাবি করছেন রেস্টুরেন্ট মালিকেরা। বাদ যায়নি রাজধানীর আভিজাত এলাকা ধানমন্ডির গাউসিয়া টুইন পিক বিল্ডিং’র ১৫ এর অধিক রেস্টুরেন্ট। যার কারনে দিশেহারা ১৪০০ এর অধিক কর্মকর্তা কর্মচারী।
গাউসিয়া টুইন পিক বিল্ডিং টির সভাপতি জাকির হোসেন ও সেক্রেটারী আবুল এহ্সান আনোয়ার জানান, আমাদের এই বিল্ডিং টি রাজউক নকশার কোন ব্যাপ্তয় না ঘটেনি। এটি একটি আইকনিক ভবন হিসেবে পুরো ঢাকা শহরের বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে সু-পরিচিত। আমাদের রেস্তোরাঁগুলি উন্নত মানের রেস্তোরাঁ হিসাবে সু-পরিচিত। এখানে দেশি বিদেশি অতিথিরা আপ্যায়ন করতে আসেন। এই বাণিজ্যিক ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট এবং চলাচলের জন্য দুইটি প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে। অগ্নি নির্বাপক সকল ব্যাবস্থা বিদ্যমান থাকা সত্তেও গত ৪ মার্চ কোন লিখিত নোটিশ ব্যাতিত হঠাৎ রাজউক অভিযান চালিয়ে আমাদের ভবনটির বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং কোন কোন প্রতিষ্ঠানকে সিলগালাও করে দেয়।
তিনি অভিযোগ তুলে আরও বলেন, একই রোডে রুপায়ন এবং জাস্টিস আমিন আহমেদ বিল্ডিং এর বাফেট লাউঞ্জ, বাফেট প্যারাডাইজ, বাফেট এম্পাইয়ার, চিকিং, সিক্রেট রেসিপি, ধাবা, স্নাক্স অ্যাটাক, গ্র্যান্ড লাউঞ্জ, বাফেট স্টোরিজ, গারলিক এন্ড জিঞ্জার, গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরি, এম্রসিয়া, ক্যাফে রিও, দা ফরেস্ট লাউঞ্জ এই রেস্তোরাঁ গুলি খোলা আছে। সেগুলোর দিকে নজর নেই রাজউক কর্তৃপক্ষের।
সভাপতি আরো বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদ্যুৎ,পানির অপচয়, অপব্যবহার ও কোন অনিয়মের অভিযোগ নাই এবং নিয়মিত বিদ্যুৎ ও পানির বিল পরিশোধ করে আসছি। আমাদের ভবনটি বর্তমান যুগের অত্যন্ত আধুনিক, দৃষ্টি নন্দন, বিনোদন উপযোগী নিরাপদ ভবন।
তিনি বলেন, রেষ্টুরেন্টগুলো বন্ধ থাকলে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা ভ্যাট ও রাজস্ব হারাবে।
কয়েকজন হোটেল মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে তারা। যার অর্ধেকের বেশি ব্যাংক লোন আছে। প্রায় ১৫ জন বাড়িওয়ালা যারা এই ভবনের ভাড়ার উপর নির্ভর করে সংসার পরিচালনা করেন।
দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে রক্ষা করে প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখার আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী রেস্টুরেন্ট দোকান মালিক ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা।
এরই মধ্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত স্বারকলিপি দিয়েছেন বলেও জানান যায়।
এসআর