রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক বরেণ্য সাংবাদিক আবু সাঈদ খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার, প্রিমিয়ার ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নওশের আলী এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান কার্ডিয়াক সার্জন অধ্যাপক এ কে এম মঞ্জুরুল আলম।
অনুষ্ঠানে অতিথি শিল্পী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা, ছায়ানটের শিক্ষক জান্নাত-এ-ফেরদৌসী ও বিমান চন্দ্র বিশ্বাস এবং জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীর নৃত্য প্রশিক্ষক সালমা মুন্নি।
সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, এ দেশে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ বিকশিত হয়েছে। বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে একুশের চেতনা ম্লান হয়ে যাবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে তরুণ প্রজন্মকে। সংখ্যার বিবেচনায় নয় বরং মানুষ হিসেবে সকল মানুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে না পারলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদেরকে পৃথিবীর সকল মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ইতিমধ্যেই ৫০টি জাতিসত্ত্বা বাংলাদেশে স্বীকৃত হয়েছে বাংলাদেশে। একুশ আমাদের সেই বিশ্বাস, যে বিশ্বাস নিয়ে আমরা জাতীয় সকল সংগ্রামে নির্ভয়ে লড়াই করে জয়ী হয়েছি। আমরা যেন আমাদের অস্তিত্বকে কখনো ভুলে না যাই।
অধ্যাপক ড. প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার বলেন, সারা বিশ্বের ১৯৩টি দেশে মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়। তিনি তার বক্তব্যে বিভিন্ন ভাষার সংমিশ্রণ এবং জাতিগত সমন্বয় এর তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেন।
সৈয়দ নওশের আলী বলেন, মাতৃভাষায় গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে। পাশাপাশি ইংরেজি ভাষা চর্চা করতে হবে। তিনি শিক্ষার্থীদের বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক এ কে এম মনজুরুল আলম বলেন, মাতৃভাষা বাংলার চর্চা ও গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে। মাতৃভাষার সম্মান বজায় রাখা আমাদের সবারই দায়িত্ব।
অনুষ্ঠান শেষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মুস্তাফা।
সভা সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ড. দিপু সিদ্দিকী, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ইউকি বড়ুয়া ও তাসনিমা ক্রোরি।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলা ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে প্রমিতভাষা চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আমাদের মাতৃভাষার প্রতি আরও যত্নশীল হওয়া উচিত।
-এমএ