For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

রাজশাহী ও ফেনীতে ভোটকেন্দ্রে আগুন

Published : Friday, 5 January, 2024 at 11:36 AM Count : 193



ভোটের একদিন আগে রাজশাহীর তিনটি ও ফেনীর একটি নির্বাচনী ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে স্কুলের আসবাবপত্র। 

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আগুন দেয়া ভোটকেন্দ্রগুলো হলো, বাঘা উপজেলার পাকুরিয়া জোতনাশী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আড়ানী ইউনিয়নের জিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিনের গনিপুর আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়া ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরসাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবনেও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

স্থানীয়রা জানান, জিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে অফিস কক্ষের ১৫টি চেয়ার, টেবিল ও আলমারি।

এ বিষয়ে জিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুরাদ আলী বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন দেয় দুষ্কৃতকারীরা। অফিসের পেছনের জানালার ফাঁক দিয়ে আগুন দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের বাইরে পেট্রোল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হবে।

এদিকে আড়ানি ঝিরানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ জানায়, রাত ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের অফিস রুমে আগুন লাগে। অফিসের দরজা জানালা বন্ধ থাকায় ধারণা করা হচ্ছে শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই দুটি ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, বাঘা ও বাগমারায় নির্বাচনী কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে বিদ্যালয়টির শিক্ষক মিলনায়তনে রাখা কম্পিউটার ও আলমিরাসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস পুড়ে গেছে। 

শুক্রবার ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটে।

ওই বিদ্যালয়টির প্রশাসনিক ভবনের পাশের দুটি ভবন আগামী রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। 

স্থানীয়রা বলছেন, বিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন অভিযোগ ও ঘটনা নিয়ে প্রধান শিক্ষক মো.জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুল হকের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। ওই দ্বন্দ্বের জেরে গত জুন মাস থেকে প্রধান শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত হয়ে আছেন। তাদের দুজনের দ্বন্দ্বের জেরে বিদ্যালয়ে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটতে পারে। এখন নির্বাচন আসায় ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে নিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার চান।

স্থানীয় লোকজন জানায়, উপজেলার চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়টিতে ভোট কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে ৪ হাজার ৩শ ৫৪জন ভোটার রয়েছেন। 

হঠাৎ ভোটের দুইদিন আগে স্কুলের প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষক মিলনায়তনে পেছনের জানালা দিয়ে পেট্টোল বা অকটেন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দূর্বৃত্তরা। এতে দুটি কম্পিউটার, চেয়ার—টেবিল ও আলমিরায় থাকা কাগজপত্র পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।

সকালে  সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান এবং সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদ্বীপ রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

স্থানীয় জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে আয়-ব্যয়, হিসেব,নিকাশসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

বিদ্যালয়ের যে ভবনগুলোতে ভোট গ্রহন করা হবে। সেগুলোতে আগুন ধরানো হয়নি। বরং প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষক মিলনায়তনের কক্ষে আগুন লাগানো হয়েছে। এতে করে মনে হচ্ছে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির অনিয়ম-দূর্নীতিসহ অভিযোগের বিষয়ে কম্পিউটারের রাখা সংরক্ষিত ডকুমেন্টস ও ওই কক্ষে থাকা আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজগুলো পুড়িয়ে আলামত নষ্ট করার উদ্দেশ্য আগুন লাগানো হয়েছে। তিনি ঘটনার মুল রহস্য উদঘাটনে প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও অফিস সহকারীকে গ্রেপ্তার করার দাবি করেন। 

উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো.জামিল আহমেদ খান বলেন, সকালে চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুর রহমানের ফোন পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেন। 

তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনের জানালার পাশে একটি অকটেনের বোতল পাওয়া গেছে। তবে আগুন কি দিয়ে ধরানো হয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। 

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদ্বীপ রায় বলেন, সকাল ৭টার দিকে ৯৯৯ এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান। আগুন লাগার কারন উদঘাটনে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন অন্যদিকে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির বিরোধকে মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়ের উল্যাহ বলেন, স্কুলের অডিট চলাকালে অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবদীনকে অব্যাহতি দেন সভাপতি আবদুল হক। এনিয়ে দীর্ঘদিনের চলমান বিরোধেও এই ঘটনা ঘটতে পারে।

উপজেলা সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, বিদ্যালয়ে আগুনের ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বে আলামত নষ্ট করতে দূর্বৃত্তরা শিক্ষক মিলনায়তনে আগুন দিয়েছে এমন হতে পারে।

তিনি বলেন, বিদ্যালয়টির আঙ্গিনায় চারটি ভবন রয়েছে। যে ভবনে আগুন লাগানো হয়েছে। সেটি ভোট কেন্দ্র নয়। পাশের দুটি ভবনে ভোট কেন্দ্র ও ভোট গ্রহন করা হবে। সেখানে যেহেতু একটি ঘটনা ঘটেছে। তাই  ভোটের সময় কেন্দ্রটিতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে।

এবিষয়ে বরখাস্ত হওয়ার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। 

এবিষয়ে কথা বলতে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুল হকের মুঠোফোন একাধিক বার চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা যায়নি।

এমএটিবি/এসআর

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি ও তার সমমনা কয়েকটি দল। তারা নির্বাচনের আগের দিন ও ভোটগ্রহণের দিন হরতালের ডাক দিয়ে, দেশের জনগণকে এই ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে।

এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,