সিলেট টেস্টে ৩১৭ রানে শেষ হল কিউইদের ইনিংস। প্রথম ইনিংস শেষে বাংলাদেশ পিছিয়ে ৭ রানে।
এর আগে কাইল জেমিসন আর টিম সাউদি দু'জনে মিলে গড়েছিলেন ৫২ রানের জুটি। তাতে লিডও পেয়েছিল কিউইরা। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দ্বারস্থ হলেন পার্টটাইম স্পিনার মুমিনুল হকের উপর। সেখানেই এলো সফলতা। জেমিসন আর সাউদি দু'জনকেই ফিরিয়েছেন মুমিনুল। এতেই অলআউট হলো নিউজিল্যান্ড।
২৬৬ রানে ৮ উইকেট নিয়ে ৩য় দিনের শুরু করেছিল কিউইরা। উইলিয়ামসনকে বার বার জীবন দিলেও শেষ পর্যন্ত কিছুটা লিড পাওয়ার স্বপ্নটা ছেড়ে দেয়নি স্বাগতিকরা। ৩য় দিন সকালে দ্রুত কিউইদের ফিরিয়ে দেওয়াটাই লক্ষ্য ছিল টাইগার বোলারদের। স্বল্প লিডও সিলেটের এই পিচে হতে পারতো সাইকোলজিক্যাল অ্যাডভান্টেজ।
কিন্তু ৩য় দিন দেখেশুনে ব্যাট চালিয়েছেন দুই টেলএন্ডার ব্যাটার কাইল জেমিসন এবং টিম সাউদি। নিউজিল্যান্ডকে এনে দিয়েছেন লিড। ২৬৪ রানে ৮ম উইকেট পতনের পর নবম উইকেটে এই দুজন গড়েছেন ৫২ রানের জুটি। তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছিল বাংলাদেশের।
তৃতীয় দিন সকাল থেকেই নিরীহ-নির্বিষ বোলিং করেছে বাংলাদেশ। একে একে আক্রমণে আনা হয়েছে তিন স্পিনার আর এক পেসারের সবাইকে। তবে উইকেট তো দূরে থাক ন্যূনতম চাপটাও সৃষ্টি করা হয়নি টাইগার বোলারদের। বরং ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করে বাংলাদেশের হতাশাই বাড়িয়েছেন জেমিসন-সাউদি। শেষ পর্যন্ত পার্টটাইমার মুমিনুলে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথমে হালকা সুইয়ে বিভ্রান্ত করেছেন কাইল জেমিসনকে। তার হালকা সুইংয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি এই পেসার। আউট হয়েছেন এলবিডব্লিউতে। চার বল পর প্রায় একই ডিলিভারিতে স্ট্যাম্প খুইয়েছেন সাউদি। ৭ রানের লিড নিয়েই থামল কিউইরা।
এর আগে দ্বিতীয় দিনের শুরতেই ব্যাট করতে নেমেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই ওপেনার টম ল্যাথাম এবং ডেভন কনওয়ে শুরুটা করেছিলেন ধীরলয়ে।১৩তম ওভারে প্রথম বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন তাইজুল ইসলাম। টম ল্যাথাম সুইপ করতে চেয়েছিলেন। তবে সেটা ব্যাটে-বলে হয়নি। ফাইন লেগে ক্যাচ নেন নাঈম হাসান।
১৬তম ওভারে নিউজিল্যান্ড শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন আরেক স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ডেভন কনওয়েকে ১২ রানে বিদায় দেন মিরাজ। ৪৪ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে উঠছিলেন কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলস।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর নিকোলসকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি পেসার শরিফুল। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মারতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন হেনরি নিকোলস। তিন উইকেট হারানোর পর ড্যারিল মিচেলকে সঙ্গে নিয়ে নতুন করে এগোচ্ছিলেন উইলিয়ামসন। দুজনের চতুর্থ উইকেট জুটির রানও পঞ্চাশ ছাড়ায়। পরে মিচেলকে ফিরিয়ে জমে যাওয়া জুটি ভাঙেন তাইজুল। অফ স্টাম্পের বাইরের ঝুলিয়ে দেওয়া বল বেরিয়ে এসে মারতে চেয়েছিলেন মিচেল। কিন্তু ব্যাটে ছোঁয়াতে পারেননি। উইকেটের পেছনে বল ধরেই বেলস ফেলে দেন সোহান। ৪১ রান করে ফিরেছেন মিচেল।
টম ব্লান্ডেলকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি নাইম। কট বিহাইন্ড হওয়ার আগে ২৩ বলে ৬ রান করেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার। এরপর ফিলিপসকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে আবারও পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামসন। এক ইনিংসে তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটির অংশ হলেন উইলিয়ামসন।
উইলিয়ামসন তখন সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে, সেসময় ফিলিপসের সঙ্গে তার জমে যাওয়া জুটি ভাঙেন মুমিনুল। ৪২ রানে গ্লেন ফিলিপস ফিরলেও তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন উইলিয়ামসন। বাংলাদেশি ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় অন্তত দুইবার নিশ্চিত জীবন পেয়েছিলেন। নতুন জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে ভুললেন না এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। তাইজুলের তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে করেছেন ২০৫ বলে ১০৪ রান। এরপর শূন্য রানে ইশ সোধিকে ফিরিয়ে চতুর্থ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তিনিই। ৩ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন মুমিনুল। ১ টি করে উইকেট পেয়েছেন নাইম, মিরাজ এবং শরীফুল।
-এমএ