দ্বিতীয় দিনের শুরুটা দুর্দান্ত ছিল নিউজিল্যান্ডের। প্রথম বলেই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে ৩১০ রানে অলআউট করেছেন কিউই অধিনায়ক টিম সাউদি। এরপর নিজেদের প্রথম ইনিংসে ওপেন করেন ডেভন কনওয়ে ও টম ল্যাথাম। ভালোই শুরু করছিল এই দুই ব্যাটার। তাইজুল-মিরাজের ঘূর্ণিতে সেটি বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি তারা। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় ল্যাথাম ও ৪৪ রানের মাথায় আউট হয়ে যান কনওয়ে।
এরপর দলের হাল ধরে সামনে এগুতে থাকেন টপঅর্ডার ব্যাটার কেন উইলিয়ামসন। হেনরি নিকোলসের সঙ্গে জুটি করে দলীয় ৭৪ রান নিয়ে মধ্যাহ্নভোজে যান কেন।
মধ্যাহ্নভোজের পর ব্যাট করতে আসার পর নিজের নামের পাশে বেশি রান জমা করতে পারলেন না নিকোলস। ৪২ বলে ১৯ রান করে শরিফুলের বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ হন তিনি। তার আগে উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি করেছিলেন নিকোলস।
তবে দলের হাল এখন পর্যন্ত ধরে রেখেছেন উইলিয়ামসন। ফিফটি করে ফেলেছেন তিনি। ডানহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে চড়ে বড় সংগ্রহের পথে এগুচ্ছে নিউজিল্যান্ড।
এর আগে ৩১০ রানে থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। যেহেতুু পুঁজি কম তাই লড়াই করতে হবে বোলারদের। সেখানে ম্যাচের শুরুতে দারুণ সফলতা দেখিয়েছেন তাইজুল-মিরাজ। কিউইদের দলীয় সংগ্রহ ৫০ এর মাইলফলকে পৌঁছার আগেই দুই ওপেনারকে ফেরান তারা।
কিউইদের ইনিংসের ১৩তম ওভারে দলীয় ৩৬ রানের মাথায় টম ল্যাথামকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তাইজুলকে সুইপ খেলতে গিয়ে ফাইন লেগ অঞ্চলে নাইম হাসানের হাতে ক্যাচ হন ল্যাথাম।
এরপর ১৬তম ওভারে ডেভন কনওয়েকে ফেরালেন অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে খেই হারিয়ে শর্টে শাহাদাত হোসেনের হাতে ক্যাচ হন এই কিউই ওপেনার। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কিউইদের সংগ্রহ ১৭ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান।
এর আগে মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। দিন শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১০ রান সংগ্রহ করে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। আজ বুধবার আবার মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু রান করতে পারলেন না গতকালের অপরাজিত দুই ব্যাটার শরিফুল ইসলাম ও তাইজুল ইসলাম। দিনের প্রথম বলেই আউট (এলবিডব্লিউ) হন শরিফুল। ফলে ৩১০ রানেই শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
স্ট্রাইকে থেকে ১৩ রানে অপরাজিত থাকা ব্যাটার শরিফুল আজ রীতিমতো স্ট্রাইক নেন। কিন্তু পেসার টিম সাউদির প্রথম বলেই লেগবিফোর উইকেটের (এলবিডব্লিউ) এর ফাঁদে পড়েন শরিফুল। যদিও প্রথমে আউটের সিদ্ধান্ত দেননি আম্পায়ার। পরে সাউদির রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন আম্পায়ার আহসান রেজা।
এর আগে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ভুলেই এটি আসলে কোন ফরম্যাটের খেলা। তাদের যেন ছিল অদৃশ্য এক তাড়া। একমাত্র মাহমুদুল হাসান জয় ছাড়া কেউই টেস্টের ব্যাটিংটা করতে পারলেন না কেউ। ফলে পুঁজিটাও তেমন বড় করতে পারেনি স্বাগতিক দল।
অথচ একটা সময় ২ উইকেটেই ছিল ১৮০ রান। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ বেশ ভালো অবস্থানেই পৌঁছে গেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। কিন্তু সেখান থেকে আর ৫৩ রান তুলতে ৫টি উইকেট হারিয়ে বসে টাইগাররা।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করার আগেই ধরা পড়েন ইশ সোধির হাতে। ১৬৬ বলে ১১ বাউন্ডারি হাঁকানো এই ব্যাটার সোধির বলে ড্যারেল মিচেলের ক্যাচ হন।
এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক করেন সমান ৩৭ রান। ফিলিপসের ফুট টাচ বলে মিড-অনে উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন পিচে সেট হওয়া শান্ত। ফিলিপসের দ্বিতীয় শিকার হন মুমিনুল। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ক্যাচ হন উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে।
এরপরই মূলত বিপত্তি ঘটে বাংলাদেশের। ৫৩ রানে হারায় ৫ উইকেট। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১০ রানে দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
কিউই পার্টটাইম অফস্পিনার গ্লেন ফিলিপস একাই নেন ৪টি উইকেট। ২টি করে উইকেট শিকার কাইল জেমিসন আর অ্যাজাজ প্যাটেলের। অধিনায়ক সাউদি ও ইশ সোধি নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
-এমএ