ঘূর্ণিঝড় হামুন'র আঘাতে কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। কয়েক ঘন্টার তাণ্ডবে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয়। এখন পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বাতাসের ধাক্কায় বৃষ্টির পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে বিভিন্ন ঘর-বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র।
টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়ার অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সাগরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক গুণ বেড়েছে। তবে এবার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে তেমন মানুষের দেখা মেলেনি।
ঝড়ো হাওয়ার কারণে জেলার অনেক জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গেছে। খোদ আবহাওয়া অধিদপ্তরই বিদ্যুৎবিহীন ছিল। সঠিক সময়ে বার্তা পৌঁছাতে পারেনি তারা। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা।
ঘূর্ণিঝড় হামুন'র প্রভাবে শহরের পাহাড়তলীর জিয়ানগরে দেওয়াল চাপা পড়ে মো. আব্দুল খালেক (৪০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন।
চকরিয়ায় বদরখালীতে গাছ পড়ে আসকর আলী (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি বদরখালী ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সদস্য।
মহেশখালীতে পাহাড় ধসে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
অপরদিকে, চকরিয়ার পূর্ব বড় ভেওলা ও বিএমচর এলাকায় তিন জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কক্সবাজার শহরের কলাতলী, হিমছড়িতে সড়কে গাছ পড়ার কারণে যান চলাচল ব্যাহত হয়। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাংলাবাজার এলাকার সড়কে গাছপালা ভেঙে পড়ে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে যানবাহন আটকা ছিল। গন্তব্যে যেতে না পেরে অনেক গাড়ি উল্টো ফিরে গেছে।
পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দা ও ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে তীব্র ঝড়ো হওয়া শুরু হয়। ওই সময় সড়কের যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় পুরো শহর অন্ধকারে ছিল।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, জেলায় বিদ্যমান ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঁচ লক্ষ পাঁচ হাজার ৯৯০ জন লোকের ধারণক্ষমতা রয়েছে। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রের ম্যানেজমেন্ট কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য জেলার রিজার্ভে ১১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা, ৬৪০ মে. টন চাল, ৭০০ বান্ডিল ঢেউটিন মজুদ রয়েছে। পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের চাহিদা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, জেলার নয়টি উপজেলার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে প্রাথমিক ভাবে সাড়ে চার লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
-এফআই/এমএ