For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

প্রতিমা বিসর্জন

বৃষ্টিস্নাত দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে সৈকতজুড়ে জনারণ্য

Published : Tuesday, 24 October, 2023 at 8:48 PM Count : 174

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে কক্সবাজারে থেমে থেমে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। একইসঙ্গে স্বাভাবিক পরিস্থিতির চেয়ে উত্তাল হয়ে উঠে সাগর। আর সেই বৃষ্টিস্নাত দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াও উপেক্ষিত হয়েছে কক্সবাজার সৈকতের প্রতিমা বিসর্জনকে ঘীরে। যা উপেক্ষা করে সৈকত হয়ে উঠেছিল জনারণ্য। যেখানে মানুষ আর মানুষে মিলে গেছে পূজারি, পর্যটক, স্থানীয়সহ সকল ধর্মের মানুষের একাকার হয়ে।

প্রতিমা বিসর্জনের মূল অনুষ্ঠানটি সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চ ঘীরে হলেও মানুষের চাপ ছিল সৈকতের সী গাল, সুগন্ধা পয়েন্ট পর্যন্ত। 

ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা প্রশাসনের কর্মীরা বলছেন, এই প্রতিমা বিসর্জন ঘীরে সৈকতে কমপক্ষে চার লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে শুরু হয় বিজয়া দশমীর সম্প্রীতির সভা। মঙ্গলবার সকাল থেকে হওয়া মাঝারি মানের বৃষ্টি তখনও অব্যাহত ছিল। এর আগে থেকে ট্রাক যোগে এ পয়েন্টে বিভিন্ন মন্ডপ থেকে আনা শুরু হয় প্রতিমা।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানান, তাদের তালিকা মতে লাবণী পয়েন্টে একে একে ২০২টি প্রতিমা আনা হয়েছিল। যেখানে কক্সবাজার জেলা ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়িসহ চট্টগ্রাম, বান্দরবন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিমা নিয়ে এসেছিলেন পূজারিরা।

সৈকতের লাবণী পয়েন্টের সম্প্রীতি সভাটি ছিল উলু ধ্বনি, মা দূর্গাকে জয় ধ্বনি আর ঢাক-ঢোল বাজনা মুখরিত। যে আবহতে সন্ধ্যার আগেই উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে ভাসিয়ে দেয়া হয় একে একে প্রতিমাগুলো। ওই সময় অনেক পূজারিকে কাঁন্না করতেও দেখা যায়।
 
সম্প্রীতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, 'শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকের এই বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা আছেন, মুসলমান সমাজের প্রতিনিধিরা আছেন, সরকারের প্রতিনিধিরা আছেন। আমি এখানে যোগ দিয়েছি একজন বৌদ্ধ নাগরিক হিসেবে। এটাই বাংলাদেশ। এটাই শেখ হাসিনার অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। এর বিপরীতে বাংলাদেশকে যারা বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করবে, এই হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান এক জাতি এক প্রাণ হিসেবে আমরা সকলেই সেই অপশক্তিকে, সেই অসুর শক্তিকে আমরা বধ করব। এটাই হোক আজকের অনুষ্ঠানের শপথ।'

তিনি বলেন, 'আজকে দেখলাম ঢাকের আওয়াজে দুর্গতিনাশনি দেবীকে বিদায় দেয়ার আয়োজন করেছি, আমরা সেই সমুদ্রের গর্জন শুনতে পাচ্ছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে বলা হচ্ছে, সাইক্লোন হামুন আঘাত হানতে পারে। আমরা দুর্গতিনাশনি দেবীর কাছে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে এই মানব সমাজকে বাংলাদেশের নাগরিককে যাতে রক্ষা করে তার জন্য পরম করুণাময়ের কাছে প্রার্থনা করি। আমি পরিস্কার করে বলতে চাই, উৎসব কখন হয় যখন আমরা সবাই মিলে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য, অগ্রগতির জন্য জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় অধিকার ধর্ম চর্চার অধিকারকে তিনি আজকে সুরক্ষা দিয়ে গেছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর যেভাবে উদযাপিত হয় একই ভাবে শ্রীকৃষ্ণের জন্মষ্টামী উৎসব হয়। একই মর্যাদায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে সেখানে অনুষ্ঠান হয়। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য সেখানে বড়দিনের আয়োজন হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তিনি ধার্মিক, কোন ওয়াক্তে নামাজ কাজা করেন না। তিনি সকল সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে তিনি একই দৃষ্টিতে দেখেন।'

কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল করের সভাপতিত্বে সভায় কক্সবাজার-রামু-ঈদগাঁও আসনের সংসদ সদস্য সাইমুন সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরীসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান জানান, সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন ঘীরে সৈকত জুড়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এটি শেষ হয়েছে।

এছাড়া, একই সময়ে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখাল নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত ও রেজুনদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।  

-এফআই/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,