১৮ কেজি মাংস ও ১০০ ডিম খাওয়া সেই বাবুল আর নেই
Published : Tuesday, 24 October, 2023 at 5:32 PM Count : 218
রাজশাহীর বাঘায় ১৮ কেজি মাংস ও ১০০ ডিম খাওয়া সেই বাবুল আক্তার (৫০) আর নেই। সোমবার রাত ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
বাবুল আক্তার উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত খেলাফত উল্লাহ সরকারের ছেলে। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালে বাবুল আক্তার ১৮ কেজি খাসির মাংস এবং ১০০টি মুরগির ডিম এক টেবিলে বসে খেয়েছিলেন। তিনি খেতে বসলেই ২০ থেকে ২৫ কেজি ওজনের একটি কাঁঠাল নিমিশেই খেতে পারতেন। বিদ্যুতের গতিতে ১১ মণ ওজনের কাঁঠের গুল একাই কাঁধে তুলে নিয়ে বহন করতেন। এক দৌড়ে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতেন স্বাভাবিক ভাবে। একটানা চার ঘন্টা সাঁতার দিয়েও ক্লান্ত বোধ করতেন না। ১২৫ কেজি ওজনের বিশাল দেহ নিয়ে অনায়াসে গাছে উঠে ডাব পেড়ে খেতেন। তবে কারো সঙ্গে বাজি ধরেই এ কাজগুলো করতেন।
বাবুল আক্তারের স্ত্রী লাইলা বেগম বলেন, আমার শ্বাশুড়ি বলতেন তিনি ১৯৭৩ সালে জন্মের পর পরই না কি পৌণে এক কেজি করে গরুর দুধ পান করতেন। তারপর বেড়ে ওঠার পাশাপাশি আরও বেশি খাবার লাগতো। তিনি প্রাপ্ত বয়সে প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় পাঁচ কেজি গরু মাংস খেতেন। তা না হয়ে যদি ডিম হতো তাহলে ২৫ থেকে ৩০টি মুরগির ডিম দিয়ে নাস্তা করতেন। এটা ছিলো তার স্বাভাবিক খাবার। আর কেউ বাজি ধরলে তো কোনো কথা ছাড়াই ১০ থেকে ১৫ কেজি মাংস ও ৫০ থেকে ১০০টি ডিম খেয়ে ফেলতেন। বয়স বৃদ্ধির পর শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে চিকিৎসকের কথা মতো খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলেন।
বাবুল আক্তারের মেয়ে যুথি খাতুন বলেন, বাবা একজন শক্তিশালী মানুষ ছিলেন। তার বিশাল দেহ আর অস্বাভাবিক খাদ্য ভক্ষণ করায় তার নাম পড়ে যায় ‘খাদক বাবুল আক্তার’। তার স্বাভাবিক খাদ্য তালিকায় পাঁচ কেজি গরু মাংস লাগতো। কিন্তু শারীরিক সুস্থ্যতার কথা ভেবেই খাদ্য তালিকা কমিয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া তার ভবিষ্যৎ ভেবে পরিবারের লোকজনও সেভাবে আর খেতে দিতো না।
ছেলে নবাব আলী বলেন, ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জীবনের প্রথম তার বন্ধুদের সঙ্গে রাজধানীর ঢাকায় গিয়েছিলেন। ওইদিন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় ‘ভূত রেস্তোরাঁ’ নামের একটি হোটেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে ভূত রেস্তোরাঁয় শতাধিক লোকের মধ্যে ১৮ কেজি খাসির মাংস এবং ১০০টি ডিম এক টেবিলে বসে
খেয়েছিলেন। এমন অবাক করা খাওয়া দেখে ধরা পড়ে যান মিডিয়ার চোখে। সে সময় অদ্ভুত এই খাওয়ার কাহিনী তুলে ধরে ‘খাদক’ ‘ভোজন রসিক’সহ রং-বেরঙ্গের নামে তাকে প্রচার করা হয়েছিল বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়।
মনিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বাবুল আক্তারের অনেক জমি ছিল। সাংসারিক ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতো না। জমি বিক্রি করে খেয়ে প্রায় শেষ করেছে। তবে শারীরিক সমস্যার কারণে পরিবারের লোকজন মৃত্যুর আগে খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিল।
-এএইচ/এমএ