For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

উত্তরের জেলাগুলোতে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত

Published : Thursday, 19 October, 2023 at 2:02 PM Count : 319

পঞ্চগড়সহ উত্তরের জেলাগুলোতে শরতকে বিদায় এবং শীতকে স্বাগত জানিয়ে হেমন্ত এসেছে তার চিরচেনা রূপে। তাইতো শীতের আগমনে চির চেনা প্রকৃতি তার রূপ পাল্টিয়ে ফিরেছে আপন রূপে। রাতভর হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা সকাল পর্যন্ত চাদরের মত বিছিয়ে থাকছে দিগন্তজুড়ে। কমতে শুরু করেছে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও।

গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। প্রতিদিনই নামছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। মঙ্গলবার এখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার তা নেমে এসেছে ২১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয় ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সেই সঙ্গে নামছে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও। 

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসতে থাকায় এখন দিনে প্রচন্ড গরম অনুভূত হচ্ছে না। বিকেল থেকেই উত্তরের হালকা হিমেল বাতাসে শুরু হয় শীতের পরশ। সন্ধ্যার থেকেই শুরু হচ্ছে হালকা কুয়াশা। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হালকা কুয়াশা রূপ নিচ্ছে মাঝারী কুয়াশায়। সকালে গাছের পাতায় শিশির বিন্দু জমে থাকছে অনেক বেলা অবধি। বৃহস্পতিবার ভোরে বিভিন্ন জায়গায় দেখা মিলছে কুয়াশা। ফসলের মাঠে উঁকি দিচ্ছে নতুন বীজের প্রস্ফুটিত চারা। তাতে শিশির বিন্দু ছড়িয়ে দিচ্ছে মৃদু শীতলতা।
 
স্থানীয়রা জানান, ভোরে বেশ কুয়াশা পড়ছে। এখন আর রাতে ফ্যান চালাতে হচ্ছে না। রাতে কাথা/পাতলা কম্বল জড়াতে হচ্ছে শরীরে। ভোর পর্যন্ত শীতের পরশ অনুভব হচ্ছে। তবে ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীত আসতে দেরি আছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, মৌসুমী বায়ু ধীরে ধীরে বিদায় নিতে শুরু করায় আকাশ পরিস্কার হচ্ছে। সেই সঙ্গে উত্তরের বাতাস শুরু হওয়ায় শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। সামনের দিনগুলোতে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে আরও কমতে শুরু করবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উত্তরের জেলাগুলোতে হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির মেঘ কেটে গেলে পুরো শীত নামবে। তেঁতুলিয়ায় কয়েকদিন ধরেই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার ছিল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। 
এখন দিনের বেলা তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকার কারণে এসি-ফ্যান চালালেও সন্ধ্যার পর থেকেই এগুলোর সুইচ অফ রাখতে হচ্ছে। শুরু হয়েছে শীতের পুরো প্রস্তুতি। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে শীতের সম্বল লেপ তোষক তৈরী শুরু করে দিয়েছেন উচ্চ ও মধ্যবিত্তরা। জেলা শহরের লেপহাটি হিসেবে পরিচিত কদমতলায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লেপ তৈরীর কারিগররা। একেকটি দোকান প্রতিদিন ২৫-৩০টি করে লেপ সেলাই করছেন। 

জেলা শহরের কদমতলা রোডের তুলা ব্যবসায়ী কেরামত আলী জানান, তুলা ও কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার আগের বছরের তুলনায় লেপের দামও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন আগে ভাগেই লেপ সেলাই করছেন। কেউবা আবার পুরোনো লেপ নতুন করে সেলাই করে নিচ্ছেন। 

তবে শীতের প্রস্তুতি নেই খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষদের। হাতে কাজ কম ও দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার সামলানোটাই তাদের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তবে শীত নিয়ে শংকায় রয়েছেন তারা। লেপ তৈরী করার মতো তাদের সামর্থ নেই। প্রচন্ড শীতে কাহিল মানুষদের জন্য প্রতি বছর সরকারি ভাবে শীতবস্ত্র বিরতণ করা হয়। কিন্তু এগুলোর পরিমাণ খুবই নগন্য। বেসরকারি উদ্যোগে কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও শহরের আশপাশেই এর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকে। প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন এই শীতবস্ত্রের দেখাই পাননা। 

ইব্রাহিম খান শাকিল, ইমন হায়দার, ওয়াহিদুজ্জামান বাদলসহ কয়েকজন পর্যটক বলেন, আমরা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এসেছিলাম। এখানে এখনই শীতের পরশ পাচ্ছি। অথচ ঢাকা ও দক্ষিণাঞ্চলে এখনো গরম। এ অঞ্চলে শীত আগে আসে তা মনে হচ্ছে।

এদিকে, শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, টমেটো, লাল শাকসহ বিভিন্ন ধরনের আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে।

পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের প্রধান তোহিদুল বারী বাবু জানান, তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। শীতের আগমন ঘটছে। কার্তিকের আগমনীতেই দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে শীতের আমেজ। উত্তরের জেলা হিমালয় কন্যা পঞ্চগড়ে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অনুভূত হতে শুরু করেছে শীতের পরশ। ঘাসের ডগায় জমছে শিশির বিন্দু। পায়ের স্পর্শে অনুভূত হচ্ছে ঠান্ডা। ভোরের সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে মিষ্টি রোদ আর সবুজ ঘাসের পাতার ওপর শিশির বিন্দু জানিয়ে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, হিমালয়কন্যা হিসেবে পরিচিত আমাদের পঞ্চগড়ে অন্য জেলার তুলনায় আগেই শীত শুরু হয়। কয়েকদিন ধরে শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে। শীত নিয়ে দুঃস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রতি বছরের মত এবারও আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা শীতের কম্বলসহ পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের চাহিদা জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।

-এসআই/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,