For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

কমলগঞ্জে ৫২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

Published : Monday, 16 October, 2023 at 9:28 PM Count : 337

মৌলভীবাজারেকমলগঞ্জ উপজেলার ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫২টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ ও ৩৬ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য। ভারপ্রাপ্ত প্রধান (সহকারী শিক্ষক) শিক্ষক দিয়ে চলছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। 

দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক শূন্যতায় বিদ্যালয়গুলো অনেকটাই অভিভাবকশূন্য হয়ে আছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদগুলো অতি দ্রুত পূরণ করা দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন মহল।

প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় চরম হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রাথমিক শিক্ষার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নানা সংকটের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দৈন্যদশা চলছে। এ কারণে অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছেন। প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব শূন্য পদ পূরণ করা হবে বলে জানান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলায় নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলিয়ে ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ১৫২ জন প্রধান শিক্ষকের এবং ৭৭৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৫২টি বিদ্যালয় চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (সহকারী শিক্ষক) দিয়ে। 
এছাড়া, উপজেলার মোট ১৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। ১৫২টি বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর রয়েছে ২২ হাজার ৩৩৬ জন। তার মধ্যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) রয়েছে ৫১ জন।

এছাড়াও জানা যায়, এ উপজেলায় বেসরকারি ভাবে ৭৬টি বিদ্যালয় রয়েছে। সেগুলোতে রয়েছে নয় হাজার ৬৮৭ জন ছাত্র-ছাত্রী। এর মধ্যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) রয়েছে ১১ জন। এসব বিদ্যালয় আবার চলছে কেজি, এনজিও ও চা বাগান পরিচালিত।

কেচুলুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক পপি আক্তার ডলি বলেন, ‘উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষাদান ও সুষ্ঠু পাঠদানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে প্রধান শিক্ষকবিহীন এসব বিদ্যালয়ে দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। আর তা না হলে দিন দিন উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠদান চরম ভাবে ব্যাহত হবে। প্রধান শিক্ষক শূন্যতার কারণে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান ধরে রাখা সম্ভব হয় না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের পাঠদানের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ, শ্রেণিকক্ষ পর্যবেক্ষণ, সভা-সেমিনারে অংশ নেয়াসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হয়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘যখন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন শিক্ষক সংকট রেখেই কর্তৃপক্ষ নিয়োগ প্রদান করেন। আবার দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ থাকায় সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের কাঁধেই ভারপ্রাপ্তের ভার পড়ছে। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা সরকারি তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা পান না। অন্যদিকে অফিসের বিভিন্ন নিদের্শনা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্তদের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হয়। এতে বিদ্যালয়ে পাঠদানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া প্রয়োজন।’

কেছুলুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিদ্যালয় ও অফিসের কাজের পাশাপাশি স্কুলে ক্লাসও নিতে হচ্ছে। শিক্ষার গুণগত মান অক্ষুন্ন রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার স্কুলে ২৬৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ছয় জন শিক্ষক দ্বারা হয় না। তাছাড়া সবাই মহিলা শিক্ষক। মহিলা শিক্ষকের অনেক সময় নানা সমস্যা থাকতে পারে সে ক্ষেত্রে যদি আরও দু'জন শিক্ষক দেওয়া হয় তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয় এবং পাঠদান আরও গতিশীল হবে।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে তার তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদানের জন্য সহকারী শিক্ষকের তালিকা তৈরি করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে কার্যক্রম চলমান আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব শূন্য পদগুলো পূরণ করা হবে।’

শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী কতজন আছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) ছয় জন থাকার কথা থাকলেও আছে তিন জন, কর্মচারী পাঁচ জনের মাঝে আছে একজন। এসব পদগুলোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ে পদগুলো পূরণ হবে।’

-এসএস/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,