হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব দুর্গাপূজা। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে সবচেয়ে বড় এ উৎসব। এ উপলক্ষে রাজশাহী মহানগরীতে জমতে শুরু করেছে কেনাকাটা। দুর্গাপূজার বেশি দিন না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে বাজারে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পূজার এখনও নয় দিন বাকি রয়েছে। এ কারণে এখন পূজার সামগ্রী বেশি বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে কিছু শাড়ি ও সিট কাপড় বিক্রি হচ্ছে। গার্মেন্টস পণ্য এখনও সেভাবে বিক্রি শুরু হয়নি। আরও কয়েকটা দিন গেলে বাজারে বিক্রি বাড়বে বলে আশা তাদের।
বুধবার সকালে মহানগরীর সাহেব বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, নিজেদের কেনাকাটার পাশাপাশি দেবী দুর্গাকে সাজাতে বিভিন্ন সাজ-সরঞ্জাম কিনছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এছাড়া, বাজারের বিভিন্ন শাড়ি ও কাপড়ের দোকান, জুতা ছাড়াও নানা প্রসাধনী সামগ্রী কিনতে দেখা গেছে।
এদিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শাখা, শঙ্খ, সিঁদুর, প্রতীমার শাড়ি, কীর্তনের মালা, কদম মালা, ঘণ্টা, ঘট, প্রদীপ, আগরদানি, ঠাকুরের মালা, জবের মালা, মুকুট, ধুতি, পাঞ্জাবিসহ পূজার নানা জিনিসপত্র কেনাকাটা করছেন তারা। মা দুর্গা আর সরস্বতীকে সাজাতে কিনছেন পছন্দের শাড়ি, মুকুট। নিজেদের জন্য নিচ্ছে বাহারি রকমের শাখা, শঙ্খ। দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মীকে সাজাতে বিক্রি হচ্ছে শাড়ি, মালা, মুকুট, নেইল পালিশসহ অন্যান্য সামগ্রীও।
পূজার কেনাকাটা করতে আসা অলোক কুমার বলেন, 'আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব এটি। আমাদের পূজার জন্য কেনাকাটা করে থাকি। আজকে এসেছি মা দুর্গার জন্য কিনতে। আরও দুই দিন বাসার সবার জন্য কেনাকাটা করব। মায়ের জন্য শাঁখা, সিঁদুর, আলতা, শাড়ি কিনেছি, মহালয়ায় এগুলো দিয়ে প্রতীমা সাজাব।'
পূজার শাড়ি কিনতে আসা শ্রী মাধূরী রায় বলেন, 'পূজার আর বেশি দিন নেই। তাই আগেই শাড়ি কিনে নিচ্ছি। একইসঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের পোষাক কিনেছি। এরপরে আস্তে আস্তে পূজার অন্য জিনিসপত্রগুলো কিনবো। কেননা একসঙ্গে সব কিনতে গেলে সমস্যা হয়। তাই কিছু কিছু করে কিনে রাখছি। পূজার বিভিন্ন সামগ্রী কিনবো মহালয়ার আগে।'
শ্রী শ্যামলী কুমার বলেন, 'শাড়ি-কাপড়গুলো আগে কিনে নিলাম। নতুবা পরে মার্কেটে ভিড়ের মধ্য কিনতে হয়। এতে করে ঠিকঠাক জিনিস কিনতে সমস্যা হয়। আবার দামও বেশি পড়ে। তাই আগেই শাড়ি-কাপড়গুলো কিনে নিচ্ছি। একইসঙ্গে সম্ভব হলে জুতা, স্যান্ডেলও কিনে নেব। আর পূজার দুই-একদিন আগে প্রসাদসহ অন্য জিনিসপত্র কিনবো।'
অপূর্ব রায় বলেন, 'বাজার ঘুরে পোষাকের দাম মোটামুটি মনে হচ্ছে। তবে পূজার কয়েকদিন আগে কেমন দাম হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। কারণ সে সময়টা ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি থাকবে দোকানগুলোতে। তাই দাম বেশি হতে পারে। এছাড়া পূজার ৮ থেকে ১০ দিন আগে জিনিসপত্র কিনলে নতুন ডিজাইনের পছন্দমত জিনিসপত্র পাওয়া যায়।'
সাহেব বাজারের কাপড়পট্টির আলম শাড়ি ঘরের বিক্রেতা রিমন বলেন, 'পূজার এখনও নয় দিন বাকি আছে। তাই পূজার কেনা-বেচা এখনও জমেনি। তবে বেচা-বিক্রি শুরু হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা তাদের পছন্দের শাড়ি কিনছেন। আশা করা যাচ্ছে, আরও পাঁচ থেকে ছয় দিন পরে জমবে কেনাবেচা।'
রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, 'বাজারে পূজার সামগ্রী বেশি বিক্রি হচ্ছে। জামা-কাপড় ও অন্যান্য পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে, তবে তুলনায় কম। পূজার এক সপ্তাহ আগে পুরোদমে শুরু হয় কেনাবেচা। আশা করা যাচ্ছে, আরও পাঁচ থেকে ছয় দিন পরে কেনাবেচা ভালো জমবে।
-এফএ/এমএ