For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

এয়ারপোর্টের থার্ড টার্মিনালে থাকছে যে সব সুবিধা

Published : Saturday, 7 October, 2023 at 1:19 PM Count : 247

আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও যাত্রীসেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উদ্বোধন হলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির উদ্বোধন করেন।  


২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী এই টার্মিনালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন। আজকের এই উদ্বোধনকে বলা হচ্ছে ‘সফট ওপেনিং।’ টার্মিনালের পুরো কার্যক্রম আগামী বছরের শেষ দিকে চালানো সম্ভব হবে।  

এ টার্মিনাল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ। বাকি তহবিলের জোগানদাতা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। 

কী কী সুবিধা থাকছে এ টার্মিনালে 
পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) করা হয়েছে। তবে এ টার্মিনালের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন হচ্ছে মডার্ন টার্মিনাল বিল্ডিং। দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকছে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া। 

স্ট্রেইট এসকেলেটর
নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালটিতে বেশ কয়েকটি স্ট্রেইট এসকেলেটর লাগানো হয়েছে। যারা বিমানবন্দরের দীর্ঘপথ হাঁটতে পারবেন না, তাদের জন্য এ ব্যবস্থা। সিঙ্গাপুর, ব্যাংককসহ বিশ্বের অত্যাধুনিক বিমানবন্দরগুলোতে বেশি যাত্রী প্রবাহের জায়গাগুলোতে এ এসকেলেটরগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। 

অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী সেবা পাবেন 
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বর্তমানে দুটি টার্মিনাল চালু রয়েছে। এ দুই টার্মিনাল দিয়ে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রী সেবা পেয়ে থাকেন। বেবিচকের তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বছরে অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। পরবর্তীতে অবশ্য তা ১ কোটি ৬০ লাখে উন্নীত হবে। ফলে ভবিষ্যতে এ বিমানবন্দরের মাধ্যমে বছরে ২ কোটি ৪০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।  

অত্যাধুনিক ব্যাগেজ বেল্ট
নতুন এ টার্মিনালে যাত্রীদের ব্যাগের জন্য তিনটি আলাদা স্টোরেজ এরিয়া করা হয়েছে। রেগুলার ব্যাগেজ স্টোরেজ, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড এবং অড সাইজ (অতিরিক্ত ওজনের) ব্যাগেজ স্টোরেজ।

যাত্রীদের স্বাভাবিক ওজনের ব্যাগেজের জন্য সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ও ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরের মতো অত্যাধুনিক এবং একইরকমের ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট থাকছে টার্মিনালটিতে। অতিরিক্ত ওজনের (ওড সাইজ) ব্যাগেজের জন্য স্থাপন করা হবে আরও চারটি পৃথক বেল্ট। এ ছাড়াও ব্যাগেজ এলাকাসহ বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা ব্যাগেজগুলোর জন্য থাকবে আলাদা লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ব্যাগেজ এরিয়া। 

১ হাজার গাড়ি রাখার সক্ষমতাসহ বহুতল গাড়ি পার্কিং  
বিশ্বমানের এই টার্মিনালে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি রাখার সক্ষমতাসহ বহুতল গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে। একটি করিডরের মাধ্যমে পুরোনো দুটি টার্মিনালের সঙ্গে নতুন টার্মিনালকে যুক্ত করা হবে। ঢাকার ব্যস্ত সড়কের যানজট এড়ানোরও অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে এতে। মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সব কটি পথই ঠেকবে তৃতীয় টার্মিনালে। 

বেবি কেয়ার-চিলড্রেন প্লে এরিয়া, ফার্স্ট-এইড
নতুন টার্মিনালের প্রতিটি ওয়াশরুমের সামনে থাকবে একটি করে বেবি কেয়ার লাউঞ্জ। এ লাউঞ্জের ভেতর মায়েদের ব্রেস্ট ফিডিং বুথ, ডায়াপার পরিবর্তনের জায়গা এবং একটি বড় পরিসরে ফ্যামিলি বাথরুম থাকবে। এ ছাড়াও বাচ্চাদের স্লিপার-দোলনাসহ একটি চিলড্রেন প্লে এরিয়াও থাকবে।

নতুন টার্মিনালে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকসহ থাকছে হেলথ ইন্সপেকশন সুবিধা, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্স্ট-এইড রুম, নানা রোগের টেস্টিং সেন্টার ও আইসোলেশন এরিয়া।

১০টি স্বয়ংক্রিয় ই-গেট
যেসব যাত্রী অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে আসবেন, তাদের জন্য পাঁচটি ই-গেট থাকবে। পাশাপাশি থাকবে ১৭৭টি চেকইন কাউন্টার, ৬৪টি বহির্গমন ইমিগ্রেশন ডেস্ক এবং ৬৪টি আগমনী ইমিগ্রেশন ডেস্ক। যাত্রীদের তল্লাশির ব্যবস্থাতেও পরিবর্তন আসছে। বডি স্ক্যানার যন্ত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তল্লাশি চলবে। 

মুভি লাউঞ্জ, ফুড কোর্ট, ওয়াই-ফাই সুবিধা
বিমানবন্দরে সময় কাটানোর জন্য নতুন এই টার্মিনালে থাকবে মুভি লাউঞ্জ, এয়ারলাইন্স লাউঞ্জ, ডে-রুম। এছাড়াও ঘোরাফেরা ও কেনাকাটার জন্য তৈরি হচ্ছে ১৪টি স্পটে ডিউটি ফ্রি শপ। টার্মিনালের বাইরে ও ভেতরে থাকবে ফুড কোর্ট, ফুড গ্যালারি, ওয়াই-ফাই এবং মোবাইল চার্জিংয়ের সুবিধা।

এছাড়াও নারী ও পুরুষের জন্য রাখা হবে পৃথক নামাজের ব্যবস্থা। যাত্রীদের নিতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য মিটার্স অ্যান্ড গ্রিটার্স প্লাজাও থাকবে টার্মিনাল-৩ এ।  


অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নতুন এই টার্মিনালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ১১টি বডি স্ক্যানার। টার্মিনালে প্রবেশ করা একজন যাত্রীকে বিমানে ওঠা পর্যন্ত হাতের স্পর্শ ছাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তল্লাশি করা যাবে। সেক্ষেত্রে যাত্রীকে বডি স্ক্যানার মেশিনের ভেতর দুহাত তুলে দাঁড়াতে হবে। এর ফলে যাত্রী ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সময় বাঁচবে। স্ক্যানিংও হবে নির্ভুল ও স্বচ্ছ।

বর্তমানে বিমানবন্দরের ভেতরের একটি জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। তবে নতুন টার্মিনাল ভবন এলাকায় একটি পূর্ণাঙ্গ ফায়ার স্টেশন করা হচ্ছে। সেখানে থাকবে একজন পৃথক ফায়ার স্টেশন ম্যানেজার। থাকবে আগুন নেভানো ও জরুরি উদ্ধারকাজ করার সবধরনের সুযোগ-সুবিধা। 


এমবি

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,