নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বালুর গদি দখলকে কেন্দ্র করে নিশাত বাহিনীর সদস্যরা তাণ্ডব চালিয়ে বালু লুট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিবাদ করায় একই পরিবারের নারীসহ চারজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এই ঘটনায় এ বাহিনীর চার সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার হাটাবো শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর থেকে নিশাত বাহিনীর অব্যাহত হুমকির মুখে বালুর গদির মালিক মোবারক হোসেনসহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
আটকৃতরা হলো হাটাবো (আতলাশপুর) এলাকার আব্দুর ওহাব ভুঁইয়ার ছেলে মারুফ। একই এলাকার মৃত ইমারতের ছেলে জুয়েল, সুফিয়ান ও মৃত আবু সাঈদের ছেলে আবু কাউসার।
ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন জানান, আতলাশপুর মৌজার সিএস ও এসএ দাগ নং ৫৯ ও ও আর এস ২০৯ নং দাগের ৩১ শতাংশ জায়গা পৈত্রিক ও ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে হাটাব এলাকার শীতলক্ষা নদীর পাড় বালুর গদি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। শুধু তাই নয়, ওই জায়গা নিজ নামে নামজারি করে এবং খাজনা পরিশোধ করে ভোগ দখলে রয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে।
‘বেশ কিছুদিন ধরে আমার ৩১ শতাংশ জমি ও বালুর গদি ব্যবসা জোরপূর্বকভাবে দখল করার পায়তারা করে আসছিল হাঁটাবো (আতলাশপুর) এলাকার লিটন ভূঁইয়া, কাউসার ভাইয়া, জিকুল ভুঁইয়া, আনিস ভূইয়া, গোলাম রব্বানী ও স্বপন ভূঁইয়া হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন বাদী হয়ে রুপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার দুপুরে প্রতিপক্ষের লোকজন ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিশাত বাহিনীর সদস্যদের এনে ট্রাকযোগে বালু লুট করে নিয়ে যায় এবং জমি দখলের চেষ্টা চালায়। পরে নিশাত বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে।’
তিনি বলেন, এসময় প্রতিবাদ করায় মোবারক হোসেন, তার বোন রোকেয়া, আশরাফুল ইসলাম ও ইসরাফিলকে পিটিয়ে আহত করে। পরে রূপগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিশাত বাহিনীর ওই চার সদস্যকে আটক করে।
মোবারক হোসেন অভিযোগ করে আরো জানান, তাকে সহ তার পরিবারের সদস্যদের গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে নিশাত বাহিনী সদস্যরা। এ অবস্থায় তিনিসহ পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ওই এলাকার নজরুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, নিশাত ও তার বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই অস্ত্র নিয়ে ঘুড়াফেড়া করে। এলাকায় জবর দখল, হামলা লুটপাট করাই এ বাহিনীর কাজ।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ লিটন ভূঁইয়া, কাউসার ভাইয়া, জিকুল ভুঁইয়া, আনিস ভূইয়া, গোলাম রব্বানী, স্বপন ভূঁইয়া হুমায়ুন কবির ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, আমাদের জমিতে মোবারক জোরপূর্বক বালুর গদি দিয়ে ব্যবসা করছে তাই আমরা বাধা দিয়েছি। ভারাটে সন্ত্রাসীদের এনে তাণ্ডব, অস্ত্র মহড়া ও বালু লুট এবং অস্ত্র নিয়ে মহড়ার বিষয়টি সঠিক না।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, নিশাত বাহিনীর তাণ্ডব ও বালু লুট করার সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং নিশাত বাহিনীর চার সদস্যকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামিদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হবে।
এসএম/এসআর
